মায়ের সঙ্গে লুকিয়ে পাসপোর্ট বানাই, বাংলাদেশে খেলবো বলে

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:১৩ অপরাহ্ণ   |   ৬৭ বার পঠিত
মায়ের সঙ্গে লুকিয়ে পাসপোর্ট বানাই, বাংলাদেশে খেলবো বলে

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

বাংলাদেশি বাবা মাসুদুর রহমান ও জাপানি মা মাতসুশিমা তমোমির একমাত্র মেয়ে মাতসুশিমা সুমাইয়া, যিনি জন্মগ্রহণ করেছেন জাপানে, তবে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা তাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। দুই বছর আগে, তিনি বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের ক্যাম্পে জায়গা করে নেন। বর্তমানে ২৩ বছর বয়সী এই উইংগার বাফুফে ভবনে অবস্থান করে জাতীয় দলের হয়ে অনুশীলন করছেন।
 

সম্প্রতি, পিটার বাটলারকে আবার বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় ফুটবলারদের মধ্যে বিদ্রোহের সুর উঠেছে। তারা ম্যাচ ও অনুশীলন বয়কটের ঘোষণা দেন এবং নিজেদের অবস্থান সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন। এই পরিস্থিতিতে সুমাইয়া ফেসবুকে পোস্ট করে জানান, তাকে কিছুদিন ধরে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন, এবং এর কারণ হলো, কোচ পিটার বাটলারের অপসারণের দাবিতে বাফুফে সভাপতির কাছে ইংরেজি চিঠি লেখা।
 

এ বিষয়ে সমকালের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে সুমাইয়া জানান, তার বাবা মাসুদুর রহমান চাননি, তার মেয়ে বাংলাদেশে খেলুক। তবে তার জাপানি মা মাতসুশিমা তমোমির সহায়তায় সুমাইয়া গোপনে বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরি করেন। দুই বছর আগে, বসুন্ধরা কিংসে ট্রায়াল দিয়ে সেখানেই জায়গা করে নেন তিনি, এবং পরবর্তীতে মালদ্বীপে লিগ খেলে জাতীয় দলে নাম লেখান।
 

সুমাইয়া বলেন, "আমার বাবা আমাকে বাংলাদেশে খেলার জন্য অনুমতি দেননি। তিনি বলেছিলেন, 'এখানে খেললে তোমার জন্য ভালো হবে না, তুমি বিদেশে খেলা।' তবে আমি মায়ের সঙ্গে লুকিয়ে পাসপোর্ট বানিয়ে ট্রায়ালে অংশ নিই। বসুন্ধরা কিংসে ট্রায়াল দিয়ে পরবর্তী সময়ে মালদ্বীপে লিগ খেলেছি। এখন আমার নামে নানা ধরনের অপপ্রচার চলছে, বলা হচ্ছে যে আমি পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নয়, সাবিনা খাতুনের জন্য দলে জায়গা পেয়েছি। যদি আমার পারফরম্যান্স খারাপ হতো, তাহলে কোচ আমার নাম বাদ দেওয়ার তালিকায় রাখতেন।"
 

সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি নিয়ে সুমাইয়া জানান, তিনি পরিবার থেকে সমর্থন পাচ্ছেন। তার মা সবসময় তাকে সাপোর্ট করেন, তবে প্রথমে তার বাবা ভয় পেয়েছিলেন, কারণ সুমাইয়া বাংলাদেশে খেলার পর পরিচিতি পাওয়া একটা ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হতে পারে। এখন, তিনি যে খোলামেলা হুমকি পাচ্ছেন, তাতে নিরাপত্তাহীনতায় আছেন এবং এজন্য সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। সুমাইয়া বলেন, "আমি সাহস করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছি, তবে এখন অনেকেই একই ধরনের হুমকি পাচ্ছেন, এবং এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করছে না।"