প্রকাশকালঃ
১৬ মার্চ ২০২৪ ১২:২৫ অপরাহ্ণ ৩০৬ বার পঠিত
প্রধান কার্যালয়ের হিসাবে খেলাপি ঋণ ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। অথচ কোর ব্যাংকিং সলিউশনের (সিবিএস) হিসাবে এই হার ২০ শতাংশের ওপরে। এমন অস্বাভাবিক পার্থক্য ধরা পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানার কৃষি ব্যাংকের হিসাবে। কেবল খেলাপি নয়, বড় গরমিল রয়েছে ঋণ বিতরণেও। যদিও একে অত্যন্ত স্বাভাবিক ও হিসাবের ত্রুটি বলে দাবি করেছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান।
কৃষি ও কৃষিকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সহজে ঋণ দিতে ১৯৭৭ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে ১ হাজার ৩৮টি শাখার মাধ্যমে। তবে কর্মকর্তাদের সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে এই ব্যাংক। যার প্রমাণ মেলে প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সূচকের হিসাবে।
ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত কর্মীদের বাদ দিয়ে মোট ঋণ বিতরণ হয়েছে ৩০ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। কিন্তু সামগ্রিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার সফটওয়ার কোর ব্যাংকিং সলিউশনের (সিবিএস) হিসাবে মোট ঋণের পরিমাণ ২৯ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ঋণ বিতরণ না করেই হিসাবে বেশি দেখানো হয়েছে ৩৬৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। তবে মোট ঋণ বেশি দেখালেও বিপরীত চিত্র খেলাপির হিসাবে। প্রকৃত’র চেয়ে ৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা কম দেখানো হয়েছে এই ঋণের পরিমাণ।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, শুরুতে আমরা একদমই অ্যানালগ ছিলাম। খাতাপত্রে বা লেজার বইয়ে হাতে লেখে হিসাব-নিকাশ করতাম। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সব হিসাব কম্পিউটারে করা হবে। এরপর আমাদের ব্যাংকাররা হিসাব-নিকাশ দেয়। কিন্তু তাতে বিভ্রাট দেখা যায়। আমার ধারণা, খাতা থেকে ঠিকভাবে সেটা উঠাতে পারেননি তারা। তাই এই গরমিল দেখা যাচ্ছে।
সামগ্রিক ডিজিটালাইজেশনেই কৃষি ব্যাংকের হিসাবের গরমিল ধরা পড়ছে বলে মনে করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ম্যানুয়ালি হিসাব-নিকাশ করেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। এতে বিভিন্ন অনিয়ম থাকতে পারে। অটোমেশন হওয়ার পর যেগুলো ধরা পড়ে যায়।
আবার কিছু ঋণ বাইরে থেকে যায়। ফলে ডেটা অন্যরকম আসতেই পারে। এখন দেখার বিষয়, এই পার্থক্যে জালিয়াতি থাকে কিনা? দুর্নীতির নির্দেশ দেয় কিনা? তবে অনিয়ম প্রতিরোধে ব্যাংকটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিস্তর নিরীক্ষা প্রয়োজন বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।