চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক স্টেকহোল্ডার কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)-এর রেজিলিয়েন্স, এন্ট্রাপ্রেনিউরশীপ অ্যান্ড লাইভলিহুড ইমপ্রুভমেন্ট (আরইএলআই) প্রকল্পের আওতায় এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. কামাল উদ্দিন। এ সময় শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এসডিএফ-এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মকর্তা, শিবগঞ্জ উপজেলার ২টি ক্লাস্টারের অফিসার ও স্বাস্থ্য-পুষ্টি ফ্যাসিলিটেটর, এছাড়া গ্রাম সংগঠনের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সহায়তা কমিটির আহ্বায়করা।
কর্মশালার শুরুতে এসডিএফ-এর জেলা কর্মকর্তা (জীবিকায়ন) জানান, ‘আরইএলআই’ প্রকল্প অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অধীনে বাস্তবায়িত একটি কার্যক্রম। এর মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, প্রশিক্ষণভিত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা, গ্রামীণ সংগঠন গড়ে তোলা, সুবিধাবঞ্চিতদের এককালীন অনুদান, অবকাঠামো নির্মাণ, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
পরে এসডিএফ চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মকর্তা ডা. মো. ইসমাঈল কর্মসূচির সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার ৫০টি গ্রাম সমিতির অতি দরিদ্র সদস্যদের জন্য ৫৮টি বিনামূল্যে হেলথ ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ২০৬৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং ৮৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩২১ জন গর্ভবতী মা পেয়েছেন মোট ৩০ লাখ ৮১ হাজার ৬০০ টাকা মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং ঝুঁকিপূর্ণ ২৪ জন প্রসূতিকে দেওয়া হয়েছে প্রতি জনে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সহায়তার অংশ হিসেবে শীতকালীন ৯,৩৭৮ প্যাকেট ও গ্রীষ্মকালীন ৭,৪৮৬ প্যাকেট সবজি বীজ, ৩৪,০০০–৫৯,৫০০ পিস আয়রন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও জিংক ট্যাবলেট এবং ওরস্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া মোট ৮,৫০০ পরিবারকে দেওয়া হবে প্রতি পরিবারে ১২টি করে হাত ধোয়ার সাবান।
তিনি আরও জানান, এসডিএফ-এর রেফারেন্সে হাসপাতালে আসা রোগীরা মূলত অতি দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। তাই সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রগুলোতে তাদের যথাসম্ভব সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।
প্রধান অতিথি ডা. মো. কামাল উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে এসডিএফ-এর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। বিশেষ করে মাতৃত্বকালীন ও সিজারিয়ান ভাতা প্রদানের উদ্যোগকে তিনি মানবিক ও সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করেন।
কর্মশালার শেষাংশে উপস্থিত অতিথিরা আশ্বাস দেন যে, এসডিএফ-এর গ্রাম সমিতির সদস্যরা যেন সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান সে ব্যাপারে তারা আন্তরিক থাকবেন।