ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, ব্যক্তি ও কোম্পানির আয়কর হার খুব বেশি কমানোর সুযোগ নেই। তবে কোম্পানিগুলো লোকসানে থাকলেও কর দিতে হয়—এই বিষয়টি নতুন বাজেটে পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। অন্যদিকে, আমদানি পর্যায়ে শুল্কহার যৌক্তিকীকরণের লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির পরিপ্রেক্ষিতে।
রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সহযোগিতা করে দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোর। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনার সমাপনী বক্তব্য দেন সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত এখনও অত্যন্ত নিম্ন। এর প্রধান কারণ কর প্রদানে জনগণের অনাগ্রহ।” তিনি জানান, বর্তমানে ১ কোটি ৪৫ লাখের বেশি টিআইএনধারীর মধ্যে রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ৪৫ লাখ। এদের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই করযোগ্য আয় না থাকায় শূন্য রিটার্ন জমা দেন।
ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে এনবিআর পুরো কর ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় আনতে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অটোমেশন ছাড়া বিকল্প নেই। কর প্রদানের জন্য মোবাইল অ্যাপ চালুর কাজ চলছে। আগামী অর্থবছর থেকে ব্যক্তি আয়করদাতাদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একই প্রক্রিয়ায় কোম্পানিকেও আনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যদিও করহার কমানো সম্ভব নয়, তবু করদাতারা বাজেটে কিছু ইতিবাচক বার্তা পাবেন। কর ব্যবস্থাকে বৈষম্যহীন ও সহজ করার জন্য কাজ চলছে।” তিনি জানান, রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হবে ভ্যাট ও আয়কর। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির পাশাপাশি এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষাপটেও আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, “সরকার বৈষম্যহীন করনীতি প্রণয়ন করতে চায়। সবাইকে একক হারে করের আওতায় আনা হবে—কারও জন্য বেশি, কারও জন্য কম—এমন ব্যবস্থা আর থাকবে না।” দীর্ঘদিন ধরে চলা কর অব্যাহতি সুবিধাও নতুন বাজেটে সীমিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।