“ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে পালিয়েছে কিছু লোক” — প্রধান উপদেষ্টা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ   |   ২৮ বার পঠিত
“ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে পালিয়েছে কিছু লোক” — প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। “কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থেই ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে পালিয়েছে”—এমন মন্তব্য করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসি থেকে এই কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
 

বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
 

আইএমএফ প্রধান জর্জিয়েভা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর অল্প সময়েই বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। “অর্থনৈতিক সংকটের কঠিন মুহূর্তে আপনি দায়িত্ব নিয়েছেন, আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।”
 

তিনি বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল করা, রিজার্ভ পুনরুদ্ধার এবং বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের মতো সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
 

অধ্যাপক ইউনূস কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আপনার অবিচল সহায়তা বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। গত বছর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আমাদের প্রথম সাক্ষাৎ এই পথ আরও সহজ করেছে।”
 

তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগে নির্বাচন হবে এবং এর পর তিনি পূর্ববর্তী কাজে ফিরে যাবেন।
 

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান ব্যাংক খাত সংস্কার ও অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “সংস্কার ছাড়া শক্ত অবস্থান সম্ভব নয়। এটি বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
 

প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার সরকার ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন ও রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি, যেখানে কিছু লোক ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে পালিয়েছে।”
 

আলোচনায় আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটও উঠে আসে। এর মধ্যে ছিল নেপালের যুব আন্দোলন, আসিয়ানভুক্তির আকাঙ্ক্ষা এবং আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারে বাংলাদেশের বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল নির্মাণ।
 

বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।