বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করা সম্ভব নয়। সময় স্বল্পতা, বিপুল ব্যয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ব্যাপক কর্মী নিয়োগ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনরূপে বিশাল আয়োজনের দিক বিবেচনা করলে এটি অযৌক্তিক।
ফখরুল আরও উল্লেখ করেন, যে সব বিষয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে, সেগুলো উপেক্ষা করে দীর্ঘ আলোচনার বাইরে থাকা বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে জাতীয় ঐক্য ক্ষুণ্ণ হবে, বিভাজন সৃষ্টি হবে এবং মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য অকল্যাণকর হতে পারে।
মহাসচিব বলেন, সংবিধান সংস্কার পরিষদ যদি প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ পঞ্জিকা দিবসের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণভোটে অনুমোদিত সংবিধান বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে—যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও হাস্যকর। সংসদে অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমেই কোনো বিল আইনে পরিণত হয়; স্বয়ংক্রিয় অন্তর্ভুক্তি কোনো প্রক্রিয়ার অংশ নয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিকল্প-২ প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবগুলো সরাসরি গণভোটে উপস্থাপন করা হবে, কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত ও নোট অব ডিসেন্ট গণভোটে প্রদর্শনের সুযোগ রাখা হয়নি। এটি একপাক্ষিক প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকারকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, বিএনপি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সার্বিক সংস্কারের অঙ্গীকার করে আসছে। তাই রাষ্ট্র কাঠামোর প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংস্কার বিএনপির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক এজেন্ডা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান ও মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।