ঈদের জামা হোক আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল

প্রকাশকালঃ ০৪ জুন ২০২৪ ০৩:৩১ অপরাহ্ণ ৮৭ বার পঠিত
ঈদের জামা হোক আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল

আবহাওয়াটাই এমন—এই রোদ এই বৃষ্টি। আবার ঈদ বলে কথা। তাই এবারের ঈদ পোশাকে সব দিকেই নজর রেখেছেন ডিজাইনাররা। ঈদ আনন্দের অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে নতুন পোশাক। প্রতিবছরই ঈদ ঘিরে নতুন নকশা, থিম, প্যাটার্ন ও কাটের বর্ণিল পোশাকের সমাহার সাজিয়ে বসে ফ্যাশন হাউসগুলো। সমসাময়িক ফ্যাশন ট্রেন্ড, ক্রেতাদের চাহিদা, আবহাওয়া, আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্যকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হয় উত্সবের পোশাক।

 

এবারের ঈদ গ্রীষ্মের গরম আর হুটহাট বৃষ্টির সময়ে পড়েছে। এ জন্য ব্র্যান্ডগুলোও সব দিক বিবেচনায় এমন পরিবেশ উপযোগী পোশাক এনেছে। এবারের ঈদ পোশাকে ক্যাজুয়ালের চলমান ধারাও যেমন রয়েছে, তেমনি আছে সমসাময়িক ফ্যাশনের চলতি ট্রেন্ড। কাপড়ের রং, প্রিন্ট, ট্রেন্ড, কাট ও ডিজাইনের বৈচিত্র্যের মেলবন্ধনই বেশি ঘটেছে ঈদ পোশাকে। বয়স, রুচি, ক্রেতাদের চাহিদা, উত্সবকে ভিত্তি করে পোশাকের নকশা করা হয়েছে।
 

এবারের ঈদে বৈচিত্র্যময় নকশা, কাজ, প্রিন্ট ও থিমের কামিজ, কুর্তি, গাউন, কড শোল্ডার, টিউনিক, টপস, শর্ট ও লং কাটের পোশাক এনেছে ফ্যাশন ব্র্যান্ড সেইলর। পোশাকে সমকালীন ও প্রাশ্চাত্য কাটের সঙ্গে এথনিক ও ট্র্যাডিশনাল প্যাটার্ন ও মোটিফের সংমিশ্রণ ঘটেছে। কোরবানির ঈদের দিন কত কাজ। মাংস কাটা, বিলিবণ্টন, রান্নাবান্না কত কি। এ সময় চাই সহজে সামলানো যায় আবার আরামদায়ক এমন পোশাক।


ঐতিহ্যের সঙ্গে ফিউশনের সমন্বয় ঘটেছে বেশি ভাপসা গরম, তার ওপর যখন তখন বৃষ্টি। এ জন্য সব ব্র্যান্ডই পোশাকে আরামের দিকটায় বেশি মনোযোগ দিয়েছে। দিনভর আরাম ও ফ্যাশনের জন্য পিমা কটন, গিয়া কটন, সফট কটন, সিল্ক, রিঙ্কেল শিফন, কটন ও রেয়নের মতো প্রিমিয়াম ও আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি করা হয়েছে ঈদের পোশাক। একটু রঙের ছোঁয়া না থাকলে উত্সবের পোশাক ঠিক জমে না।


তাই বৈচিত্র্যময় রঙের পাশাপাশি নিখুঁত হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, কারচুপি, স্ক্রিন ও ব্লকপ্রিন্ট, সিকুইন ওয়ার্ক, ডিজিটাল প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে ক্যালিগ্রাফি, জিওমেট্রিক, ফ্লোরালহ সমসাময়িক মোটিফের ডিজাইন উঠে এসেছে পোশাকে। অভিজাত লুক, আরাম, আবহাওয়াকে মাথায় রেখে হালকা ওজনের শাইনি ফেব্রিক এবং সুনিপুণ কারুকাজ করা হয়েছে পোশাকগুলোয়।

 

লাল রঙের শর্ট টপের গলার একপাশে নকশা করে ভিন্নতা আনা হয়েছে। ফাপা ও ঢিলেঢালা কাটের এই টপে মিলবে আরাম ও ফ্যাশন দুটোই। একপাশে থাকা রশিতে চাইলে ইচ্ছামতো চাপিয়েও নিতে পারবেন।
ঈদ ঘিরে এবারও বর্ণিল পোশাকের আয়োজন করেছে ফ্যাশন ব্র্যান্ড টুয়েলভ ক্লদিং। পোশাকের ম্যাটেরিয়াল থেকে শুরু করে নকশা ও কাটিং—সব কিছুতেই উত্সবের আবহকে প্রাধান্য দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

 

গরম বলে কামিজ, কুর্তি, কাফতানের গলা ও হাতায় বেশি পরিবর্তন এসেছে এবার। পোশাকে বাড়তি ঝুল, ঘের, কুঁচি ও ফ্রিলের ব্যবহার বেড়েছে। পাঞ্জাবি গলা, হাইনেকের কামিজেও নতুনত্ব এসেছে। পোশাকে একাধিক লেয়ারের জনপ্রিয়তা বেশ কিছু দিন ধরেই। এবার ঈদে মেয়েদের পোশাকেও এমন লেয়ারের চল চলছে বেশি। ঈদ উপলক্ষে ফ্যাশনেবল পোশাক এনেছে ক্লাব হাউস। গরমে আরামের কথা ভেবে সাদা, ঘিয়ে, হালকা গোলাপি, নীলের মতো হালকা রং প্রাধান্য দিয়েছে তারা।

 

উত্সবের কথা মাথায় রেখে কামিজের পাড়ে কনট্রাস্ট কাপড়ের পাইপিং ও সুতার বুননে নকশা করা হয়েছে। চুমকির ব্যবহারে পোশাকের জমিন, গলা ও হাতায় ভিন্নতা এসেছে এবারও। হাফসিল্ক, মসলিন ও সিল্কের পোশাকেই এমন ধারা বেশি দেখা যাচ্ছে। কুঁচি দেওয়া পোশাকের রাজত্ব চলছে এবারও। সঙ্গে আছে সিকোয়েন্স ও গ্লিটারের ব্যবহার। ঈদ ঘিরে এবারও নতুন নকশা ও প্যাটার্নের পোশাক এনেছে ওটু।

 

আন্তর্জাতিক ট্রেন্ডের সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে পোশাকের সমাহার সাজিয়েছে তারা। ভিসকচ, ব্লেন্ডেড কাপড়ে আরামদায়ক পোশাক করা হয়েছে। রেট্রো প্যাটার্নের টপ আর ঢিলেঢালা পালাজ্জোও ফিরে এসেছে ঈদ বাজারে। বিকেলের সাজে একটু ছিমছাম থাকা চাই। এ সময় হালকা রঙের এমন পোশাক ভালো মানাবে।

 

লেয়ারের বুক ও হাতায় কাজ থাকায় উত্সবের ভাবটাও জমবে বেশ। ঈদের দিন হালকা ও আরামদায়ক পোশাকের সাজটাই বেশি দেখা যায়। রাতের সাজে দেখা যায় ভারী আবহ। এ জন্য একটু অভিজাত ও ভারী কাজের পোশাকের চাহিদা থাকে। এদিকটা বিবেচনায় মসলিন, লিনেন, সিল্কের কাপড়ের কামিজ, কুর্তি, টিউনিক করেছে ব্র্যান্ডগুলো।

 

পোশাকের গলা, বুক, হাতা এবং ওড়নার পাড়ে, নিচের অংশে ভারী কাজ করা আলাদা ফ্রিল যুক্ত করে অভিজাত ভাব আনা হয়েছে। পোশাকের বাড়তি লেয়ারও ফ্যাশন স্টেটমেন্টে ভিন্নতা এনে দেবে ঈদে। ঈদ বলে কথা। সাজ পোশাকে একটু অভিজাত না হলে কী হয়! বুকে ও হাতায় জমকালো কাজ করা এই কামিজ ঈদের রাতের সাজে অনায়াসে মানিয়ে যাবে। আলাদা লেয়ার থাকায় যোগ করবে জমকালো ভাব।