চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এক হৃদয়বিদারক ঘটনায় প্রতিবন্ধী সন্তানসহ এক গৃহবধূকে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। প্রবাসে থাকা স্বামীর অনুপস্থিতিতে ওই গৃহবধূকে মারধর করে বসতঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সালমা বেগম সাথী।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৬ জুলাই) উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের কমলকান্দি গ্রামে। এর আগের দিন রাতে সালমা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ তাকে স্বামীর বাড়িতে পৌঁছে দেয়। তবে পরদিন সকালেই আবারও তাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
সালমা বেগম জানান, তার স্বামী জহির হোসেন ও ভাসুর মিলে একটি টিনশেড পাকা ঘর নির্মাণ করেছিলেন। স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী হওয়ায় তিনি সন্তানদের নিয়ে সেই ঘরে বসবাস করতেন। কিন্তু সম্প্রতি শাশুড়ি রাবেয়া বেগম ও ননদ নাছিমা বেগমের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ চরমে ওঠে। কয়েক দফা হামলা-মারধরের পর অবশেষে তাকে ও তার প্রতিবন্ধী সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী সালমা বলেন, "আমার ভাসুরের উসকানিতে শাশুড়ি ও ননদ মিলে আমাকে নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এখন আমি সন্তানসহ খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছি।"
তার স্বামী জহির হোসেন মালয়েশিয়া থেকে জানান, "আমার স্ত্রী ও সন্তানদের উপর যে অবিচার চলছে, তার সুষ্ঠু বিচার চাই। অন্তত আমার পরিবার যেন বাড়িতে থাকতে পারে, সে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই।"
এদিকে শাশুড়ি রাবেয়া বেগম দাবি করেন, “বউয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। সে আমাকে ও আমার পরিবারকে জড়িয়ে মামলা করেছে। একসাথে থাকলে আরও ঝামেলা বাড়বে, তাই আমি চাই সে অন্যত্র গিয়ে থাকুক।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন রতন বলেন, “বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছি, কিন্তু একপক্ষ মানলেও অন্যপক্ষ মানছে না। ফলে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।”
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহআলম জানান, “অভিযোগ পাওয়ার পর ওই নারীকে রাতে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। তবে পুনরায় নির্যাতনের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”