ন্যায্য মজুরি থেকে বরাবরই বঞ্চিত নারী শ্রমিকেরা 

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৯ মার্চ ২০২৫ ০২:৪১ অপরাহ্ণ   |   ১১৭ বার পঠিত
ন্যায্য মজুরি থেকে বরাবরই বঞ্চিত নারী শ্রমিকেরা 

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-

 

শনিবার (০৮ মার্চ) বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে কুড়িগ্রামের নারীরা মজুরি বৈষম্য ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। বিশেষ করে, গ্রামের নারী শ্রমিকরা যারা কঠোর পরিশ্রম করেন, তাদের মজুরি পুরুষের তুলনায় অনেক কম, এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব প্রকাশ পায়।

 
নারী অধিকার নিয়ে কথার পরিবর্তে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি তুলে, নারী শ্রমিক ছামিনা বেগম বলেন, মাঠে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমরা কাজ করি ট্যাকা (টাকা) পাই সংসার চালাই। নারী দিবস কী জানি না বাহে। জানলেও বা কী হবে? গরিব মানুষের কে বা খোঁজ রাখে বাহে! একজন পুরুষের চেয়ে বেশি কাজ করার পরও নারী বলে আমরা মজুরি কম পাই। কই এ নিয়ে তো কেউ কথা বলে না। অনেক নারী আজ শতশত নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অথচ কোন বিচার নেই। তাহলে  নারী দিবস আমাদের জানাটা কী জরুরি? 

 

কিছু নারীর কণ্ঠে উঠে এসেছে, কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকার দিনমজুর মহিমা বেগম এবং মন্জু রানী সেনের মতামত। তারা জানান, তারা প্রতিদিন প্রচণ্ড গরমে আলু তোলার কাজ করেন, কিন্তু তাদের মজুরি মাত্র ১০ কেজি আলু যা বিক্রি করে সামান্য কিছু অর্থ পাওয়া যায়। তাদের দাবি, মজুরি বৈষম্য ও নারী নির্যাতন বন্ধ করার পাশাপাশি ন্যায্য সম্মান ও অর্থ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
 

এদিকে, শিক্ষার্থী শতাব্দী রায় ও মিষ্টি খাতুন বলেন, আমরা যাতায়াতের পথে নিরাপদ নয়, পাবলিক পরিবহনে নারীদের জন্য সিট বরাদ্দ থাকলেও অনেক সময় তা পাওয়া যায় না এবং নারীদের পোশাক, চলাফেরা নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হয়। নারীদের সম্মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
 

ফুলবাড়ী জছিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আকতারা বেগম নারীদের উন্নতি নিয়ে বলেন, এক সময় নারীরা কাজ করার কথা ভাবতেন না, কিন্তু এখন তারা পুলিশ, আর্মি, পাইলট, এমনকি মেট্রোরেল চালাচ্ছে। যদিও গ্রামে নারীরা এখনও মজুরি বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার, তবে নারীরা পুরুষের সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে।
 

বাজারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সরকার জানান, বিশ্বের মহান সৃষ্টি নারীরা, কিন্তু বাস্তবে নারীরা অবহেলিত ও নির্যাতিত। নারীদের যথাযথ সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা দিলে নারী দিবসের উদ্দেশ্য সফল হবে।
 

এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা. সোহিলী পারভীন বলেন, সরকার নারীদের অধিকার, মর্যাদা ও নির্যাতন বন্ধে কাজ করছে, তবে সব স্তরের মানুষকে এর প্রতি সচেতন হতে হবে।
 

অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এখন নারীরা নির্যাতন হলে প্রতিবাদ করছে, থানায় অভিযোগ দিচ্ছে। আশা করি, আগামীতে সব কিছু পরিবর্তন হবে এবং নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।