কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ের সঙ্গে জড়িত চার কূটনীতিকের বরাতে জানা গেছে, কাশ্মীর হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তবে এসব প্রচেষ্টা মূলত শান্তি স্থাপনের জন্য নয়, বরং সামরিক প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতির অংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে মোদি ‘সন্ত্রাসী আস্তানা ধ্বংস’ এবং ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সরাসরি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেননি।
প্রতিবেদন আরও জানায়, কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনী তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে এবং হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ পাল্টা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন, “যদি উত্তেজনা বাড়ে, তবে আমাদের থামাতে কেউ পারবে না। মোদি উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করলে, আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব। পাকিস্তান যথেষ্ট শক্তিশালী এবং উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত।”
ভারতের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে কর্মকর্তারা পাকিস্তানের অতীতের সন্ত্রাসবাদে সহায়তার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। তারা দাবি করেন, সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় তদন্ত চলমান রয়েছে এবং হামলাকারীদের পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কিছু প্রযুক্তিগত প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন জানিয়েছেন, মোদি সরকারের সামনে এখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০১৬ ও ২০১৯ সালের কাশ্মীর হামলার পরও ভারত পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল।
তবে হামলার পাঁচ দিন পরও ভারত সরকার কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম প্রকাশ করেনি এবং পাকিস্তানের জড়িত থাকার পক্ষে উল্লেখযোগ্য প্রমাণও প্রকাশ করা হয়নি। অন্যদিকে, পাকিস্তান সরকার হামলায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।