গণতন্ত্রের শত্রু হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত : শেখ পরশ

প্রকাশকালঃ ৩১ মে ২০২৩ ০৪:৫৩ অপরাহ্ণ ৮৮ বার পঠিত
গণতন্ত্রের শত্রু হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত : শেখ পরশ

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, এই দেশে যে নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজমান তার আরেকটা প্রমাণ যে বিএনপি কোনোরকম বাধা-বিপত্তি ছাড়াই সভা সমাবেশ করে চলেছে। তাদের রাজনৈতিক অধিকার তারা চর্চা করছে।

আজ মঙ্গলবার বরিশালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়সভায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, 'আমাদের কিন্তু সমাবেশ করতে দেওয়া হত না।

এমনকি আমাদের সমাবেশে পুলিশের লাঠি চার্জ করা ছিল নিত্ত-নৈমিত্তিক ব্যাপার। যারা ২১ আগস্ট সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে বোমা মেরে ২৫ জন বিরোধী মতাদর্শের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে তারা আবার সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলে কোন মুখে বুঝি না। কাজেই এই বরিশাল নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচন শুধু একটা গতি, একটা সময় নির্ধারণ করবে না, একটা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বরিশালের এই নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম।'


তিনি আরো বলেন, 'এই নির্বাচনটা এমন একটা সময় হচ্ছে, মাত্র ৬ মাস পর জাতীয় নির্বাচন। বরিশালের এই নির্বাচনে নৌকার জয় জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করে। তাই আমরা বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখছি। নির্বাচনী প্রচারণা কমিটিতে যাদেরকে রাখা হয়নি তাদের উদ্দেশে বিনয়ের সাথে বলব, মান অভিমান ভুলে গিয়ে, আপনারা দয়া করে নৌকার পক্ষে কাজ করবেন।

আপনাদের কাছে আমার বিনীত এবং হাত জোর করে অনুরোধ করছি, আপনারা সবাই নিঃস্বার্থভাবে এবং নিঃশর্তভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করেন।'


'রাজনীতিতে আনুগত্য ও শৃঙ্খলা একটা বিরাট ব্যাপার' উল্লেখ করে শেখ পরশ বলেন, 'আমাদের আনুগত্য নৌকার প্রতি। নৌকা কিসের প্রতীক? নৌকা বঙ্গবন্ধুর প্রতীক, নৌকা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক। নৌকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক। নৌকা আমাদের অনুভূতিরও প্রতীক।

কারণ নৌকা আমাদের ভালোবাসার নাম। নৌকার সম্মান রাখার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এই নির্বাচনে আমাদের নৌকার মান সমুন্নত রাখার শপথ নিতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থ বা আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থ ভুলে এখন আমাদের নৌকাকে তুলে ধরতে হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা এই নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।'

তিনি বলেন, 'আপনাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা নৌকার সম্মান রাখতে পারে। আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি যে, অন্ততপক্ষে এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবার পর থেকে সকল নির্বাচনই অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়ে চলেছে। আগামীর নির্বাচন আরো সুষ্ঠু এবং কঠিন নির্বাচন হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হয়। বিশেষ করে সাম্প্রতিক নির্বাচনসমূহ তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। সুতরাং আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা না, যারা নির্বাচন প্রত্যাহার করে, নির্বাচনের দিন হরতাল-অবরোধ ডাকে, নির্বাচনের দিন জনগণকে ভয়-ভীতি দেখায়, যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্রের শত্রু, সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা।'


প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, 'আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত একজন সজ্জন মানুষ। এদেশের ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ, বৃদ্ধ-বনিতা সকলের কাছে জনপ্রিয় একজন মানুষ। তার জনপ্রিয়তার ধারে কাছে এই বরিশাল নগরীতে কেউ নেই।'

তিনি আরো বলেন, 'আমরা ঘরে বাহিরে এক ও অভিন্ন। আমাদের সকল নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন। আমরা গাজীপুরের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমরা জনগণের ভোটে হারি নাই। আমরা ষড়যন্ত্রের কাছে হেরেছি। গাজীপুর সিটি নির্বাচন থেকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে নতুন করে কৌশল করে সামনের নির্বাচনগুলোতে কাজ করব। গাজীপুরের নির্বাচনে আমাদের কোনো ক্ষতি হয় নাই। আমাদের ক্ষতি হয়েছে আমরা একজন মেয়রকে হারিয়েছি। কাজেই আমরা গাজীপুর থেকে শিক্ষা নিয়েছি। গাজীপুরের পুনরাবৃত্তি আর অন্যান্য সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে হবে না বলে বিশ্বাস করি।'


'আমরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন নিয়ে বরিশালে কাজ করছি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমাদের উদ্দেশ্য হলো বরিশালের মানুষের কল্যাণ করা, বরিশাল সিটির উন্নয়ন করা, জাতির পিতার বাংলাদেশে, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোন দুর্বৃত্তদের জায়গা নাই। আমরা শেখ হাসিনার উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। এটাই হোক আমাদের শপথ।'

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বলেন, 'পরশের নেতৃত্বে যুবলীগ সুসংগঠিত হবে এবং শক্তিশালী হবে। যে কর্মযজ্ঞ দেশরত্ম শেখ হাসিনা বাংলাদেশে শুরু করেছেন সেই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ থেকে বরিশাল বঞ্চিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি আধুনিক, উন্নত-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বরিশাল সিটি গঠনের লক্ষ্যে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠিয়েছেন। যুবলীগ এমন একটি সংগঠন যেটা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে পারবে। আমাদের অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা।'

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. গোলাম কবির রাব্বানী চিনু, নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. এ কে এম জাহাঙ্গীর, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তালুকদার মো. ইউনূস। সঞ্চালনা করেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।