প্রকাশকালঃ
২০ জুলাই ২০২৩ ০৩:০৩ অপরাহ্ণ ২৯৬ বার পঠিত
নবী (সা.)-এর সহধর্মিণী আয়েশা (রা.) বলেন, যেদিন থেকে আমার জ্ঞান-বুদ্ধি হয়েছে সেদিন থেকেই আমি আমার মা-বাবাকে দ্বিন ইসলামের অনুসারীরূপে পেয়েছি এবং আমাদের এমন কোনো দিন যায়নি, যে দিন সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের কাছে আসেননি। যখন মুসলিমরা কঠিন বিপদের সম্মুখীন হলো, তখন আবু বকর (রা.) হাবশায় হিজরতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন।
তিনি বারকুল গিমাদ নামক স্থানে এসে পৌঁছালে ইবনু দাগিনা তাঁকে আশ্রয় দানের ঘোষণা দেন এবং নিজ শহরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। আবু বকর (রা.)-কে ইবনু দাগিনার আশ্রয় প্রদান কুরাইশরা মেনে নিল এবং তারা তাঁকে নিজ বাড়িতে ইবাদত করার অনুরোধ করেন এবং তিনি যেন প্রকাশ্যে নামাজ ও তিলাওয়াত না করেন।
আবু বকর (রা.) নিজ বাড়িতেই ইবাদত করতে থাকেন। কিছু দিন পর তিনি নিজ ঘরের আঙিনায় একটি মসজিদ বানালেন এবং সেখানে সালাত আদায় ও কোরআন তিলাওয়াত করতে লাগলেন। ফলে মুশরিকদের স্ত্রী-পুত্ররা তাঁর কাছে ভিড় জমাতে লাগল। তাদের কাছে তা ভালো লাগত এবং তাঁর প্রতি তারা তাকিয়ে থাকত।
এতে কুরাইশদের নেতৃস্থানীয়রা ঘাবড়ে গেল। তারা ইবনু দাগিনাকে ডেকে তাঁর অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিল।
আয়েশা (রা.) বলেন, তারপর ইবনু দাগিনা আবু বকর (রা.)-এর কাছে এসে বলল, যে শর্তে আমি আপনার জিম্মাদারি নিয়েছিলাম, হয়তো আপনি সে শর্তের ওপর সীমাবদ্ধ থাকুন, নয়তো আমার জিম্মাদারি ফেরত দিন। আবু বকর (রা.) বললেন, আমি আপনার জিম্মাদারি ফেরত দিচ্ছি এবং আল্লাহর আশ্রয় লাভেই আমি সন্তুষ্ট।
এ সময় আল্লাহর রাসুল (সা.) মক্কায় ছিলেন। তিনি বললেন, আমাকে (স্বপ্নযোগে) তোমাদের হিজরতের স্থান দেখানো হয়েছে। আমি খেজুর বৃক্ষে পরিপূর্ণ একটি কঙ্করময় স্থান দেখলাম, যা দুটি প্রান্তরের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এই স্বপ্ন দেখার পর যাঁরা হিজরত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ মদিনার দিকে হিজরত করলেন। আর যারা আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন তাদের কেউ কেউ মদিনায় ফিরে গেলেন।
আবু বকর (রা.)-ও হিজরতের জন্য তৈরি হলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বলেন, আপনি অপেক্ষা করুন। আমি নিশ্চিতভাবে আশা করছি যে আমাকেও হিজরতের অনুমতি দেওয়া হবে। আবু বকর (রা.) বললেন, আমার পিতা আপনার জন্য কোরবানি হোক, আপনি কি এমনটি আশা করেন যে আপনি অনুমতি পাবেন?
তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন আবু বকর (রা.) আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গী হওয়ার উদ্দেশ্যে নিজেকে হিজরত থেকে বিরত রাখলেন এবং তাঁর কাছে যে দুটি উট ছিল, সেগুলোকে চার মাস অবধি বাবলার পাতা খাওয়াতে থাকলেন। (সংক্ষেপিত) (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২২৯৭)