পাবনার ঈশ্বরদীতে জনতা ব্যাংকের পাকশী শাখার ব্যবস্থাপক খালেদ সাইফুল্লাহ (৪৫) ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন।
রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ব্যাংকের নগদ অর্থ নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঈশ্বরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।
নিখোঁজ খালেদ সাইফুল্লাহ ঈশ্বরদী পৌর শহরের হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা, আব্দুল গফুর শেখের ছেলে।
জনতা ব্যাংকের ঈশ্বরদী করপোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মোহছানাতুল জানান, গত শনিবার (৪ অক্টোবর) পাকশী শাখার ব্যবস্থাপক খালেদ সাইফুল্লাহ ফোনে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রয়োজনের কথা জানান। পরদিন সকালে তিনি ক্যাশ রেমিট্যান্সের জন্য করপোরেট শাখায় আসেন।
বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে তিনি জনতা ব্যাংকের দাশুড়িয়া বাজার শাখা থেকে ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। পরে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে ঈশ্বরদী করপোরেট শাখা থেকে আরও ১ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। টাকা হস্তান্তরের সময় আনসার সদস্য মাহবুব উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনীয় ভাউচার ও রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর শেষে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তারা দুজন ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে পাকশীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। গাড়িটির চালক ছিলেন মো. ইসমাইল হোসেন।
কিন্তু শাখায় পৌঁছানোর কথা জানালেও পরে খালেদ সাইফুল্লাহর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিকেলে পাকশী শাখার সহকারী ম্যানেজারকে যোগাযোগ করে জানা যায়, তিনি এখনো পৌঁছাননি। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেয় এবং ঈশ্বরদী থানায় জিডি করে।
দাশুড়িয়া শাখার ব্যবস্থাপক শাহিনুর রহমানও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে খালেদ সাইফুল্লাহ আমাদের শাখা থেকে ৩০ লাখ টাকা তুলেছিলেন।”
এদিকে সঙ্গে থাকা আনসার সদস্য মাহবুব জানান, “ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঈশ্বরদী ব্র্যাক ব্যাংকের সামনে এসে তিনি আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। তারপর তিনি গাড়ি নিয়ে চলে যান।”
নিখোঁজ ম্যানেজারের স্ত্রী দিলরুবা বেগম বলেন, “ব্যাংক থেকে আমার স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ। তিনি স্বেচ্ছায় কোথাও গেছেন নাকি কেউ তাকে গুম করেছে—আমরা নিশ্চিত নই।”
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুন নূর বলেন, “ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানিয়ে একটি জিডি করেছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”