বাগেরহাটের মোংলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগে বিএনপির ২১ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি হিসেবে মোংলা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক জুলফিকার আলীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতা তিতুমীর চোকদার।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে মোংলা থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পরদিন বুধবার দুপুরে মোংলা প্রেসক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পৌর বিএনপি। সেখানে তারা মামলাটিকে "রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে প্রণোদিত" বলে অভিহিত করে এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। নেতারা আরও জানান, মামলা প্রত্যাহার না হলে তারা কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন।
তিতুমীর চোকদার তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মোংলা বন্দর শ্রমিক সংগঠন আওয়ামীপন্থী নেতাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, যা শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব দখল করেন এবং তার অনুসারীদের মাধ্যমে সংগঠনটি পরিচালনা শুরু করেন।
ঘটনার পটভূমিতে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে শ্রমিক সংঘ চত্বরে সাধারণ শ্রমিকরা এনসিপির উদ্যোগে একটি তলবি সভার আয়োজন করেন। একই সময় ও স্থানে মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিএনপি সমর্থিত শ্রমিক দলও একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী উভয়পক্ষ কর্মসূচি পালনে অনড় থাকে। এ সময় এনসিপির শ্রমিক নেতারা মিছিলসহ শ্রমিক সংঘ চত্বরে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন।
ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর গতকাল তিতুমীর চোকদার মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, সংঘর্ষে তিনি ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা মারধরের শিকার হন এবং সংগঠনের এক নারী নেত্রীকেও প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়।
বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী এ বিষয়ে বলেন, "আমার জনপ্রিয়তা ও বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হিসেবেই এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।"
মামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার বিকেলে পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে।