ইসলামে মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রতিদান

প্রকাশকালঃ ২০ আগu ২০২৩ ০১:২৫ অপরাহ্ণ ২১৩ বার পঠিত
ইসলামে মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রতিদান

রোপকারার্থে মানুষ যে ভালো কাজ করে মহান আল্লাহর কাছে তা বিশেষভাবে গৃহীত হয়। আবু জার (রা.) বলেন, ‘আমি নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল শ্রেষ্ঠ? তিনি বলেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান এবং তাঁর পথে সংগ্রাম। আমি বললাম, কোন শ্রেণির দাস মুক্ত করা উত্তম? তিনি বলেন, যার মূল্য বেশি এবং যে তার মনিবের কাছে আকর্ষণীয়। আমি বললাম, আমি যদি তা করতে না পারি? তিনি বলেন, তুমি কর্মরত কোনো ব্যক্তিকে সাহায্য করবে অথবা কোনো অক্ষম বেকারের হয়ে কাজ করে দেবে।

তিনি বলেন, আমি যদি তাও করতে না পারি? তিনি বলেন, মানুষকে ক্ষতি করা থেকে দূরে থাকবে। সেটাই হবে তোমার পক্ষ থেকে তোমার জানের সদকা। (বুখারি, হাদিস : ২৫১৮)


উল্লিখিত হাদিস থেকে জানা যায়, ঈমান আনার পর মানবসেবায় কাজ করা মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। আর কারো উপকার করতে না পারলে অন্তত তার ক্ষতি না করা।

মানবসেবার মাধ্যমে কখনো কখনো জান্নাত ও জাহান্নাম নির্ধারিত হয়। আবু জার (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, বান্দাকে জাহান্নাম থেকে কিসে মুক্ত করবে? তিনি বলেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, ঈমানের সঙ্গে আমলও লাগবে? তিনি বলেন, আল্লাহ তাকে যে জীবিকার উপকরণ দিয়েছেন তা থেকে দান করবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, যদি লোকটি দরিদ্র হয়, দান করার মতো কিছু না থাকে, তার ক্ষেত্রে আপনি কি মনে করেন? তিনি বলেন, সে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে।

আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, লোকটির কথায় জড়তা থাকায় যদি সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করতে না পারে তাহলে তার ক্ষেত্রে আপনি কী মনে করেন? তিনি বললেন, যে কাজ করতে পারে না—এমন লোকের সে কাজ করে দেবে। আমি বললাম, সে যদি নিজেই কাজ করতে না পারা লোক হয় তাহলে তার ক্ষেত্রে আপনি কী মনে করেন? তিনি বলেন, মজলুমকে সাহায্য করবে। 


আমি বললাম, সে যদি এমন দুর্বল হয় যে মজলুমকে সাহায্য করার মতো সংগতি তার নেই? তিনি বললেন, তুমি কি তোমার সাথির মধ্যে কোনো ভালো কিছু আছে বলে আশা করতে পারছ না? সে মানুষকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, যখন সে এ কাজ করবে তখন কি সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে? তিনি বলেন, যখন কোনো মুসলিম এই কাজগুলোর কোনো একটা করবে তখন সেটি তার হাত ধরে তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে।’ (তাবারানি আওসাত, হাদিস : ৫০৮১; সহিহ আত-তারগিব, হাদিস : ৮৭৬)

আলোচ্য হাদিস থেকে জানা যায়, জনকল্যাণমুখী কাজ জান্নাতপ্রাপ্তি ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির অন্যতম কারণ। ইসলামে অন্নহীনকে অন্ন দেওয়া অন্যতম শ্রেষ্ঠতম ইবাদত। ওমর (রা.) বলেন, ‘নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, আমলের মধ্যে কোন আমল সর্বোত্তম? তিনি বলেন, তোমার দ্বারা কোনো মুমিনের মনে আনন্দ সঞ্চার করা। হয়তো তুমি তার ক্ষুধা দূর করবে অথবা বস্ত্রহীন অবস্থা থেকে উদ্ধারে তুমি তাকে বস্ত্র দেবে অথবা তুমি তার কোনো প্রয়োজন পূরণ করবে।’ (তাবারানি আওসাত, হাদিস : ৫০৮১; সহিহুত তারগিব, হাদিস : ২৬২১)

মহান আল্লাহ আমাদের মানবসেবায় কাজ করার তাওফিক দান করুন।