রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার কারণ ও করণীয়

প্রকাশকালঃ ১৮ জুন ২০২৩ ০৬:১৭ অপরাহ্ণ ২২০ বার পঠিত
রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার কারণ ও করণীয়

র্তমানে বেশির ভাগ মানুষ ‘ডিসলিপিডেমিয়া’ বা রক্তে অধিক চর্বির সমস্যায় ভোগে। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল রক্তনালিতে জমা হতে হতে রক্তনালির স্বাভাবিক যে রক্তস্রোত, তা বাধাপ্রাপ্ত হয়। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়, যা মাঝেমধ্যে মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ বিষয়ে একটু সচেতন হওয়া দরকার।


শরীর দুটি উৎস থেকে কোলেস্টেরল পায়- 
১. লিভার নিজেই প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল তৈরি করে।

২. বাকি কোলেস্টেরল আসে প্রাণিজ খাদ্য থেকে। যেমন—খাসির মাংস, হাঁসের মাংস, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, বড় মাছের মাথা, দুধ ইত্যাদি হলো কোলেস্টেরলসমৃদ্ধ খাবার।

এগুলোতে উপস্থিত স্যাচুরেটেড ও ট্রান্সফ্যাট শরীরের ক্ষতির কারণ। কোলেস্টেরল কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল ও টোটাল কোলেস্টেরল।


কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার কারণ
♦  অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস।

♦ কায়িক পরিশ্রম কম করা।

♦ রান্নায় তেলের ব্যবহারে সচেতন না হওয়া; প্রতিদিন ভাজাপোড়া খাবারকে প্রাধান্য দেওয়া।

♦ ধূমপান, মদ্যপান, জর্দা সেবন, তামাক সেবন ও কিছু ড্রাগ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তির ‘ডিসলিপিডেমিয়া’ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।


খাদ্যতালিকায় যেসব পরিবর্তন আনা উচিত
এ ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শে চলা উচিত। কারণ একেকজনের ক্ষেত্রে একেকভাবে বিষয়টিকে ম্যানেজ করতে হয়। তবে কিছু নিয়ম সবার জন্যই প্রযোজ্য। যেমন—

♦ অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ না করা এবং সরল শর্করা খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া।

♦ পর্যাপ্ত পরিমাণে মৌসুমি ফল ও শাক-সবজি খাওয়া।

♦ ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত কাঁচা সবজি সালাদ বা জুস হিসেবে খাওয়া।

♦ প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটাচলা বা এক্সারসাইজ করা।

♦ ধূমপান বা অন্যান্য বদ-অভ্যাস থাকলে যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা।

♦ রান্নায় তেলের ব্যবহারে সচেতন হওয়া। অতিরিক্ত তেলের খাবার, ভুনা খাবার এড়িয়ে চলা।

♦ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত গরুর মাংস, হাঁসের মাংস, খাসির মাংস ও দুধ বা দুধজাতীয় খাবার বাদ দেওয়া। প্রয়োজনে খাদ্যতালিকায় টক দই রাখা যাবে।

♦ তা ছাড়া মিশ্র বাদাম, কাঁচা দেশি রসুন, তেঁতুল ইত্যাদি খাবারও খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তবে অবশ্যই পরিমাণ ও সময় পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে।

♦লিপিড প্রফাইলে ঝামেলা হলে শুরু থেকেই সচেতন হওয়া জরুরি। লাইফস্টাইল ও খাদ্যতালিকা মেনে চললে ডিসলিপিডেমিয়া থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা সম্ভব।


লেখক
ক্লিনিক্যাল ডায়াটিশিয়ান ও

নিউট্রিশন কনসালট্যান্ট, ইবনে সিনা

ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, মালিবাগ