প্রকাশকালঃ
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ ৬৪৪ বার পঠিত
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। প্রতি দুই মাস পর পর একেকটা ঋতু আসে সাথে আসে নানান ধরনের পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে আমাদের জীবনে। প্রতিটা ঋতুই রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য, রয়েছে নিজস্ব রূপ ও নিজস্ব ধারা।
প্রকৃতির পালা বদলে কখনও গ্রীষ্মের তাপের প্রখরতা, কখনও স্নিগ্ধ জলধারা, কখনও আবার কুয়াশায় মাখা শীতের সাথে হয় দেখা কখনো বা পাখি ফুলের মেলায় প্রকৃতি ছেয়ে যায়। একেক ঋতুতে আমাদের পরিচয় হয় প্রকৃতির বিভিন্ন রূপের সাথে। আরে পরিবর্তন পরিচয় সাথে মানিয়ে নেওয়ায় জীবনের একটি ধারাবাহিকতা হয়ে গিয়েছে।
তাই প্রকৃতির পরিবর্তনের সাথে অন্তরেও কিছু পরিবর্তন আসুক না পরিবর্তন সুন্দর তাই পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া এক ধরনের সৌন্দর্য তাই বসন্তকে কেন্দ্র করে অন্তরের টুকটাক পরিবর্তন দেখে নেওয়া যাক:
রঙ ও ফুল
বসন্তকে ঘিরে যেহেতু অন্দরের সাজসজ্জা তাই সেখানে রঙ এবং ফুলের চাহিদা শীর্ষে থাকবে। যতটা সম্ভব রঙিন রঙের ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও ঘরের নকল ফুলের জায়গায় কাঁচা ফুল রাখা শোভনীয় কাঁচের ফুল ঘরকে দৃষ্টিনন্দন গড়ে তোলে। বসন্ত মানেই রংবেরঙের নানান ফুল। কাঁচা ফুলের সুবাসে যখন ঘর মম করবে তখন মন উৎফুল্ল থাকবে। সুন্দর গন্ধ, ফুল, রং মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। মনের ওপরে অন্দরসজ্জার অনেকটা প্রভাব পড়ে। অন্দর সজ্জায় ফুল একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বসন্ত কে কেন্দ্র করে ঘরের রঙিন ফুল রাখুন এবং মনোরম অন্দরের সৃষ্টি করুন।
পর্দার ব্যবহার বসন্ত মানেই উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের নৈপুণ্য প্রদর্শন। অর্থাৎ ঋতুর রাজ বসন্তে যেকোনো কিছুতে অনেক উজ্জ্বল এবং গাঢ় রঙ ব্যবহার হয়ে থাকে। অন্দরের পর্দাকে বাসন্তী সাজে পরিবর্তন করতে চাইলে উজ্জ্বল রঙের পর্দা ব্যবহার করা উচিত। যা বসন্তের সাথে মানানসই। এক রঙের পর্দা না লাগিয়ে পর্দাতে যাতে অন্য রঙের কনট্রাস্ট থাকে সেই ধরনের পর্দা বেশি মানানসই বসন্তের সাথে। সরাসরি একটি এক রঙের গাড়ো উজ্জ্বল পর্দা ঘরে সৌন্দর্যতে একটু ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তবে বসন্তের পর্দাতে সাদা, হলুদ, কমলা ও টিয়া এই রংগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এই রং গুলো যেমন উজ্জ্বল ঠিক তেমনি প্রাণবন্ত।
অন্দরে গাছ অন্দরে ইনডোর প্ল্যান্টের ব্যবহার যে অন্দর কে শুধুমাত্র সতেজ ও সজীবতাই নিয়ে আসে এমনটা নয়, বরং সৌন্দর্য বাড়াতেও এর জুড়ি ব্যাপক। ইনডোর প্ল্যান্টের সবুজ সতেজতা অন্দরকে নির্মলতার স্পর্শ দিয়ে থাকে যা মনেও দেবে প্রশান্তির পরশ। এসব ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে, যার কারণে আপনি ঘরে ইনডোর প্ল্যান্ট লাগাবেন। যেমন- গাছ আপনার ঘরের বাড়তি খালি জায়গাটুকুকে ভরাট করে নতুনত্ব নিয়ে আসতে পারে। এছাড়াও বা একটি বারান্দায় জুড়ে সম্পূর্ণ বৃক্ষ রোপণ করতে পারেন। আর ঘরের কোনায় যদি গাছ রেখে বাড়তে জায়গা থাকে সেখানে অন্যান্য অনুষঙ্গ দিয়েও সাজাতে পারেন।
দেয়াল ও কর্নার বর্তমান সময় বাসা বাড়িগুলো একটু ছোট ধাঁচের হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে খুব বেশি আসবাব রেখে সজ্জায়িত করা সব সময় সম্ভব হয় না। তবে চাইলেই ঘরের দেয়াল বা ঘরের কর্নার গুলোর দিকে একটু বিশেষ নজর দেওয়া যায়। ঘরের দেয়ালগুলো যদি অন্যরকমভাবে সাজানো যায় এবং যা দেখতে আকর্ষণীয় লাগবে এবং ঘরে ঢুকেই সরাসরি সেই দেয়ালের দিকে চোখ আটকাবে। অন্দর সজ্জার গুরুত্বপূর্ণ অংশই কিন্তু দেয়াল কিংবা ঘরের কর্নার। দেয়ালে রঙিন নকশা জাতীয় ফ্রেম যেমন- বোহো আর্ট, রিকশা আর্ট, ম্যান্ডেলা আর্ট ও নানান আলোকচিত্র ফ্রেমবন্দি করে সেগুলো দেয়ালে লাগানো যায়। ঘরের একটি কর্নারে ওয়াটারফল রাখা যেতে পারে কিংবা নানান রঙের মোড়া এবং তার উপরে কিছু গল্পের বই, লন্ঠন ও মোমবাতি এসব দিয়ে ঘরের কর্নার গুলো সাজানো যেতে পারে।
রঙ্গিন বিছানা শীতকে বিদায় দেওয়ার সময় হয়েছে এখন। শীতের ভারী কম্বল ও ভারী বেডশিট উঠিয়ে ফেলার আর তার জায়গায় পাতলা বেডশিট ব্যবহার করার। বসন্তকে কেন্দ্র করে একটু রঙিন এবং পাতলা ধরনের বিছানার চাদর বিছান এবং নানান রঙের কুশন ব্যবহার করুন। রংবেরঙের নানান নকশার চাদর বিছানোর পারেন। বাটিক কিংবা ব্লক সবচেয়ে বেশি পছন্দ বসন্ত উপযোগী বিছানা চাদর।
বসার ঘর আড্ডায় মজায় আনন্দে আত্মীয় থেকে পরিবার বন্ধু বান্ধব প্রিয়জন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সময় কাটানোর যে জায়গাটা সেটা হল বাসার বসার ঘর। তাই বাসার বসা বসার ঘর যত মনোরম এবং সুসজ্জিত ও রঙিন হবে ততই বেশি সুন্দর লাগবে । বাসার বসার ঘর আপনার রুচির পরিচয় দেয়। আপনি কতটা আভিজাত্যময়, সুন্দর রুচির মানুষ তা প্রকাশিত হয় বসার ঘরে চিত্র দেখার মাধ্যমেই। তাই বসার ঘরে তাজা ফুল রাখুন। সোফার কভারগুলোর রঙিন রাখুন এবং বিপরীত কোন রঙের কুশন ব্যবহার করুন। এছাড়াও একটু পাতলা পর্দা বসন্তের জন্য উপযোগী। বসন্তের মিষ্টি রোদ যাতে পর্দার ভেতর থেকেও দেখা যায়।
ঋতুরাজ বসন্তকে আনন্দের সাথে আগমন করুন। পরিবর্তন সবসময়ই সুন্দর। তাই প্রতিটি ঋতুতেই অন্দরকে টুকটাক পরিবর্তন করুন।