কোরআন কখন এবং কিভাবে পড়ব

প্রকাশকালঃ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ ৪৩০ বার পঠিত
কোরআন কখন এবং কিভাবে পড়ব

ল্লাহ তাআলার বড় মেহেরবানি যে তিনি আমাদের ওপর কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। যা এমন একটি কিতাব, যার মাধ্যমে আরবের সেই জাহেলি জাতি সৌভাগ্যবান জাতিতে পরিণত হয়েছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআন দিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ তৈরি করেছিলেন। এত গুরুত্বপূর্ণ কিতাব আল-কোরআনের শিক্ষা আজ অবহেলিত।

দিন দিন আমরা কোরআন শিক্ষা থেকে দূরে বহুদূরে সরে যাচ্ছি। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা আজ কোরআন শিক্ষার গুরুত্ব যথাযথভাবে অনুধাবন করতে পারছি না। সে জন্য আমাদের কোরআন শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে। আজকে আমরা এই প্রবন্ধের আলোকে আল-কোরআনের শিক্ষায় করণীয় সম্পর্কে জানতে পারব, ইনশাআল্লাহ।

কোরআনের শিক্ষা ও এর কর্মনীতি বাস্তবায়নে যা যা করতে হবে তাও কোরআন ও হাদিসে বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। যথা :


ভালো শিক্ষকের কাছে পড়া : যিনি সহিহভাবে কোরআন পড়তে পারেন তার কাছে কোরআন শিক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে যে শিক্ষকের কোরআন শিক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ আছে তার কাছে পড়লে আরো ভালো হয়। আল্লাহর বাণী—‘তোমরা জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা করো, যদি তোমরা না জেনে থাকো। (সুরা নাহল, আয়াত : ৪৩)

নিয়মিত পড়া : সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন শিক্ষার জন্য নিয়মিত সময় দেওয়া দরকার। যদিও কম সময় হয়। প্রতিদিন চর্চার মধ্যে থাকলে সহিহভাবে কোরআন শিক্ষা সহজ হবে এবং যা চর্চা হবে তা আয়ত্তে থাকবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এটা খুবই খারাপ কথা যে তোমাদের মধ্যে কেউ বলবে, 

আমি (নিয়মিত কোরআন না পড়ার কারণে) কোরআনের অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি; বরং (নিয়মিত কোরআন না পড়ার কারণে) তাকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করতে থাকো (নিয়মিতভাবে), কেননা তা মানুষের অন্তর থেকে বাঁধন ছাড়া উটের চেয়েও দ্রুতগতিতে চলে যায়। (বুখারি, হাদিস : ৫০৩১-৫০৩৩; মুসলিম, হাদিস : ৭৯০)


মশক করা : কোনো যোগ্য শিক্ষকের কাছে মশক করলে পড়ার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। মশক হলো, শিক্ষক পড়বে তারপর সেভাবে ছাত্রও পড়বে। এ ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমেও মশক করা যায়।

পরিবার-পরিজনকে শিক্ষা দেওয়া : প্রত্যেক মুসলিমকে তার পরিবার-পরিজন ও সন্তানদের কোরআন শিক্ষা দেওয়া অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা তোমাদের নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত : ০৬)

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, ‘কোরআনের বিষয়ে তোমাদের ওপর অবশ্য পালনীয় এই যে নিজে কোরআন শিক্ষা করা এবং তোমাদের সন্তানদের কোরআন শিক্ষা দেওয়া। কেননা এ বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে এবং তার প্রতিদানও দেওয়া হবে।’ (ইবন বাত্তাল : ৪৬)


ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো বেশি বেশি পাঠ করা : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের কেউ কি এক রাতে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করা সাধ্যাতীত মনে করো?’ এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে যে এটা পারবে? তখন তিনি বলেন, ‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’ অর্থাৎ সুরা ইখলাস কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)

অতএব যেসব সুরা ও আয়াত সম্পর্কে হাদিসে বেশি ফজিলত ও বেশি নেকির কথা বর্ণিত হয়েছে, সেগুলো ভালোভাবে শেখা ও বেশি বেশি পড়া দরকার।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে আল-কোরআন শিক্ষার ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে; কোরআনের বিধানকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।