ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:-
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে স্বামী হেলাল উদ্দিনকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী হাফিজা খাতুন ও প্রেমিক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি, প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক আলী মনসুর এ রায় ঘোষণা করেন।
নিহত হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী হাফিজা খাতুন (৪০), মুক্তাগাছার ভাবকী গ্রামের বাসিন্দা, এবং তার প্রেমিক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (৪৯), ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরখরিচা গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় হাফিজা খাতুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, তবে প্রধান আসামি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ পলাতক রয়েছেন। মামলার তৃতীয় আসামি আরমান মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
২৩ বছর আগে মুক্তাগাছার ভাবকী গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে হাফিজা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। এরপর হেলাল উদ্দিন প্রবাসে চলে গেলে, হাফিজা খাতুন একটি এনজিওতে (ডেসটিনি) কাজ শুরু করেন, যেখানে তিনি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন করেন। মাসুদ বিয়ের আশ্বাস দিয়ে হাফিজার কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করেন।
হেলাল উদ্দিন প্রবাস থেকে ফিরে আসার পর তাদের সম্পর্কের বাধা হয়ে দাঁড়ালে, হাফিজা ও মাসুদ পরিকল্পিতভাবে হেলাল উদ্দিনকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা হেলাল উদ্দিনকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে গলাকেটে হত্যা করেন এবং ঘটনা আড়াল করতে প্রচার করেন যে ‘ডাকাতরা খুন করেছে’।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম উল আজম খান লিসন জানান, মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত হাফিজা খাতুন ও আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম রাজীব জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে, প্রধান আসামি মাসুদ পলাতক থাকায়, নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা তার দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।