ডাউন সিনড্রোম শিশু নানা ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, লক্ষণ ও করণীয়
প্রকাশকালঃ
২২ মার্চ ২০২৩ ০২:২৩ অপরাহ্ণ ৪৭২ বার পঠিত
শারীরিক ও মানসিক নানা ত্রুটি নিয়ে জন্মায় ডাউন সিনড্রোম শিশু। নিরাময় সম্ভব না হলেও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুণ্ডু, শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
মানবদেহের প্রতিটি কোষের কেন্দ্রে ক্রমোজমের ভেতরের ডিএনএকে বলা হয় বংশগতির ধারক ও বাহক। মানুষের শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য যেমন আচার-আচরণ, বুদ্ধিমত্তা, চেহারা, উচ্চতা, গায়ের রং—সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত হয় ডিএনএর মাধ্যমে। তাই ডিএনএ বা ক্রমোজমের কোনো রকম অসংগতি হলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক নানা ত্রুটি দেখা দেয়। এগুলোকে বলে জেনেটিক ত্রুটি।
কারণ
মানবদেহে প্রতিটি কোষে ক্রমোজমের সংখ্যা থাকে ৪৬টি। ডাউন সিনড্রোম ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রতিটি দেহকোষে ২১তম ক্রমোজমে একটি অতিরিক্ত ক্রমোজম থাকে, যাকে ‘ট্রাইসমি ২১’ বলা হয়। এই অতিরিক্ত ক্রমোজমটির কারণে বিশেষ কিছু শারীরিক ও মানসিক ত্রুটি নিয়ে ডাউন সিনড্রোম শিশুর জন্ম হয়। ২১তম ক্রমোজমের অসংগতির ফলে ডাউন সিনড্রোম দেখা দেয়, এটা জানা গেলেও ঠিক কোন কোন কারণে এই অসংগতি হতে পারে, সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আজও নিশ্চিত হতে পারেননি।
লক্ষণ
* এই শিশুগুলো খুব নরম তুলতুলে হয়। লো মাসেল টোনের কারণে শরীরটা একটু ফোলা ফোলা হয়।
* অনেকের মধ্যে জিহ্বাটা একটু বের করে রাখার প্রবণতা থাকে। মুখমণ্ডল ছোট হয়, থুতনি সেভাবে বোঝা যায় না, গলা ছোট হয়।
* এই শিশুদের মাংসপেশির শিথিলতা বা কম উচ্চতা, চোখের কোণ ওপরের দিকে ওঠানো, চ্যাপ্টা নাক, ছোট কান, হাতের তালুতে একটি মাত্র রেখা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যও দেখা যায়।
* কানে কম শোনা, কথা বলতে দেরি হওয়া, কম বুদ্ধি ইত্যাদি জটিলতা থাকে।
* হাঁটাচলা ও মাংসপেশির গঠন সঠিক হয় না।
* আইকিউ বা বুদ্ধিমত্তা অনেক কম হয়।
* কিছু ক্ষেত্রে আক্রান্তদের অল্প বয়সেই হৃদরোগের সমস্যা হয়।
* জন্মগতভাবে কিছু রোগ যেমন—অ্যানেটশন ডিফিক্ট হাইপার অ্যাক্টিভিটি (এডিএইচডি) হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
করণীয়
ডাউন সিনড্রোম কোনো রোগ নয়, তাই এটি নিরাময় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে সঠিক সময়ে লক্ষণগুলো চিহ্নিত করে সঠিক পরিচর্যা, পুষ্টিকর খাবার, স্পিচ, ল্যাঙ্গুয়েজ ও ফিজিক্যাল থেরাপি দিলে পরিচর্যায় শারীরিক সমস্যাগুলো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।