ঢাকা প্রেস নিউজ
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) নিবন্ধিত নিয়োগপ্রাপ্ত ও সুপারিশপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। দুপুর পৌনে ২টার দিকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সড়ক অবরোধ ও পুলিশের অবস্থান আজ সোমবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন, ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, শাহবাগ মোড়ের বাম পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা এবং ডান পাশে এনটিআরসিএ’র নিবন্ধিত নিয়োগপ্রত্যাশীরা অবস্থান নেন। চারপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং শাহবাগ মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে জলকামান ও এপিসি রাখা হয়।
নিয়োগপ্রত্যাশীদের দাবি এনটিআরসিএ নিবন্ধিত শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক জিএম ইয়াসিন বলেন, এনটিআরসিএ এখন পর্যন্ত ১৭টি নিয়োগ পরীক্ষার সুপারিশ করলেও মাত্র পাঁচটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়েছে, ফলে প্রায় ১২-১৩ হাজার যোগ্য শিক্ষক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। বহু শিক্ষক একাধিকবার পরীক্ষায় পাস করেও চাকরির সুপারিশ পাননি, অথচ কিছু ব্যক্তি আবেদন ছাড়াই নিয়োগ পেয়েছেন।
প্রাথমিকের নিয়োগপ্রত্যাশীরা অভিযোগ করেন, তাদের নিয়োগ বাতিলের রায় বৈষম্যমূলক। সরকারের সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ পেলেও পরবর্তীতে তা বাতিল করা হয়েছে, যা তারা প্রতারণা হিসেবে দেখছেন। তারা দ্রুত রায় বাতিল করে নিয়োগ চূড়ান্ত করার দাবি জানান।
পূর্ববর্তী আন্দোলন ও আদালতের রায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীরা সমাবেশ করেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ছয় হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এর আগে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছিলেন।
৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন।
২৮ মে হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া স্থগিত করেছিলেন। পরে আপিল বিভাগ এই স্থগিতাদেশ খারিজ করলে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।