ঢাকা প্রেস
মোঃ শফিকুল ইসলাম,চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি:-
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাদুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবর আলীর বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা এবং আর্থিক স্বচ্ছতার অভাবসহ বিভিন্ন অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানার কাছে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য দুইটি পৃথক তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
অভিযোগকারীদের দাবি, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বাবর আলী তার পদমর্যাদা ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক লাভের মেশিনে পরিণত করেছিলেন। সাবেক ইউসুফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদ্যালয়ে দীর্ঘসময় অনুপস্থিত থাকতেন।
তিনি ২০০৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ১২টি দোকানঘরের ভাড়া বাবদ প্রায় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা এবং আমবাগানের আয় থেকে প্রাপ্ত আরও ৪ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, নিয়মনীতি উপেক্ষা করে চার মাস আগে চারজন কর্মচারীকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই নিয়োগের জন্য ৭ লাখ থেকে ১১ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।
জেলা পরিষদ থেকে উন্নয়ন কাজের জন্য প্রাপ্ত অর্থ নিয়েও যথাযথ হিসাব না দিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফয়সাল ফেরদৌস জানিয়েছেন, তদন্ত কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে নিরপেক্ষভাবে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই ইউএনও’র কাছে জমা দেওয়া হবে।
প্রধান শিক্ষক বাবর আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, দোকান ভাড়া ও অন্যান্য আয়ের অর্থ বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে ব্যয় করা হয়েছে। কর্মচারী নিয়োগ সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই করা হয়েছে এবং তার সঙ্গে আর্থিক কোনো লেনদেন হয়নি। সরকার পরিবর্তনের পর নিরাপত্তার অভাবে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তাধীন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে এলাকাবাসীর এমন ক্ষোভের ফলে বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।