দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর আগামীকাল থেকে চালু হচ্ছে ‘রামসাগর’ ট্রেন

প্রকাশকালঃ ২৯ আগu ২০২৩ ১২:০৫ অপরাহ্ণ ১৭২ বার পঠিত
দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর আগামীকাল  থেকে চালু হচ্ছে ‘রামসাগর’ ট্রেন

দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর আগামীকাল মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) থেকে চালু হচ্ছে জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ‘রামসাগর’ ট্রেন। গাইবান্ধার বোনারপাড়া থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত  ট্রেনটি চলাচল করবে। কাল সকাল ১০টায় বোনারপাড়া স্টেশনে ট্রেনযাত্রার উদ্বোধন করবেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

ট্রেনটি চালু হওয়ার খবরে শুধু গাইবান্ধা নয়, উত্তরের অন্য আট জেলার সাধারণ মানুষও উল্লসিত হয়ে উঠেছে। এদিকে উদ্বোধনের জন্য বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ।

রেল সূত্র জানায়, ট্রেনটি সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটের গাইবান্ধার বোনারপাড়া থেকে গাইবান্ধা, কাউনিয়া ও রংপুর হয়ে দিনাজপুর পর্যন্ত চলাচল করত। মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টায় ট্রেনটি গাইবান্ধা থেকে দিনাজপুর যেত। ভাড়াও ছিল কম। কিন্তু ২০১১ সালের জুলাই মাসে ট্রেনটি ইঞ্জিন ও লোকবলের অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। 


এরপর ‘সাধারণ মানুষের ট্রেন’ নামে পরিচিত ট্রেনটি চালুর দাবিতে স্থানীয়ভাবে আন্দোলন শুরু করে মানুষ। তখন থেকে সভা সমাবেশ মানববন্ধন কর্মসূচি চলতে থাকলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। এভাবেই পেরিয়ে যায় প্রায় এক যুগ। অবশেষে বিক্ষুব্ধ মানুষের দাবির মুখে ট্রেনটি চালু হচ্ছে।

গাইবান্ধা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম ও শিক্ষক অধ্যাপক আবদুর রশিদ বলেন, অসংখ্য ছাত্রছাত্রী অল্প খরচে ট্রেনে জেলার বৃহত্তম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গাইবান্ধা সরকারি কলেজ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতে পারবে। পাশাপাশি গাইবান্ধাসহ উত্তারাঞ্চলের আট জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। এ কারণে গাইবান্ধা জেলার স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের প্রায়ই দিনাজপুর যেতে হয়। এ ক্ষেত্রে ট্রেনটির গুরুত্ব অপরিসীম।

কারণ ট্রেনটি সকালে গাইবান্ধা থেকে রওনা দিয়ে মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টায় দিনাজপুরে পৌঁছে যেতে পারে। গাইবান্ধা থেকে দিনাজপুরের ভাড়া আগে ছিল মাত্র ৬০ টাকা। কিন্তু বাসে একই সময় লাগলেও ভাড়া ৩০০ টাকা লাগত। এ ছাড়া গাইবান্ধা থেকে দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ে যাতায়াতের পর্যাপ্ত বাস নেই। তাই ট্রেনটি চালু হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে।


গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবীর তনু বলেন, ‘আট জেলার মানুষকেই ট্রেনে বিভাগীয় শহর রংপুরে নানা প্রয়োজনে যাতায়াত করতে হয়। উত্তরাঞ্চলের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার ক্ষেত্রে ট্রেনটি মূল ভূমিকা পালন করত। সকলের পক্ষে গাড়ি ভাড়া করা সম্ভব নয়।’ তিনি রংপুরসহ অন্যান্য জেলায় যাতায়াতের ভাড়া আগের মতোই রাখার দাবি জানান।

গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপণ বলেন, ‘নদীভাঙনকবলিত গাইবান্ধা অঞ্চলের মানুষের কাছে কম ভাড়া ও নির্দিষ্ট সময়ে চলাচলের জন্য ট্রেনটি খুবই জরুরি ছিল। ট্রেনটি চালু হলে গাইবান্ধা থেকে পঞ্চগড়  রুটে চলাচলকারী যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি পাবে। গাইবান্ধাসহ কয়েকটি জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’

ট্রেনটি আগে বোনারপাড়া থেকে দিনাজপুরের মধ্যে চলাচল করত। এখন ট্রেনটি পঞ্চগড় পর্যন্ত যাবে। এটি চালু থাকলে যাত্রীরা যাতায়াত ও আর্থিক ক্ষেত্রে উপকৃত হবে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর ওপর চাপ কমবে।