ঢাকা প্রেস,সিলেট জেলা প্রতিনিধি:-
সিলেটের জাফলংয়ে স্বামীকে হত্যা করার অভিযোগে তার স্ত্রী, প্রেমিকসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের চতুর্থ আদালতের বিচারক শায়লা শারমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— কিশোরগঞ্জের নিকলীর ছেত্র গুরুই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে ও নিহতের স্ত্রী খুশনাহার (২২), তার প্রেমিক গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের দড়িতাজপুর গ্রামের সোলাইমান মণ্ডলের ছেলে মাহমুদুল হাসান (২২), এবং সহযোগী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাজিরটেক দাউদপুর গ্রামের জিন্নাত আলীর ছেলে নাদিম আহমদ (১৯), যাকে নাইম নামেও পরিচিত।
মামলার বিবরণী অনুযায়ী, কিশোরগঞ্জের নিকলীর ছেত্রা গুরাই হিলচিয়া গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে আলে ইমরান (৩২) ঢাকায় একটি জুতার কারখানায় কাজ করতেন। ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল তিনি স্ত্রীকে নিয়ে সিলেটের জাফলংয়ে বেড়াতে আসেন। ১৭ এপ্রিল বিকেলে তার মরদেহ সিলেটের গোয়াইনঘাট থানাধীন জাফলং বল্লাঘাট রিভারভিউ রিসোর্টের পেছনে পাথরচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনার পর নিহতের বাবা আব্দুল জব্বার গোয়াইনঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তের পর, ১৯ এপ্রিল রাতে পুলিশ খুশনাহার ও নাদিম আহমেদ নাঈমকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জবানবন্দি অনুযায়ী, তারা ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আলে ইমরানকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে এবং মরদেহ পাথর চাপা দিয়ে রাখে। পরে পুলিশ মাহমুদুল হাসানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২৩ নভেম্বর থেকে বিচার কার্যক্রম শুরু হলে, দীর্ঘ শুনানি শেষে ২৮ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এবং আদালত রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে, খুশনাহার ও মাহমুদুল হাসানকে পেনাল কোডের ২০১ ধারায় আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আসামি নাদিম আহমদ নাঈমকে খালাস দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত পিপি আইনজীবী মো. জালাল উদ্দীন জানান, রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরেক আসামি আব্দুর রকিব নাবালক হওয়ায় তার বিচার শিশুবিচার আদালতে হচ্ছে।