উত্তেজনার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

প্রকাশকালঃ ০৬ মার্চ ২০২৪ ১১:২২ পূর্বাহ্ণ ৩৮৯ বার পঠিত
উত্তেজনার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

 

৫০টি বুথে একযোগে ৫০ জন আইনজীবীর ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। একইভাবে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দ্বিতীয় দিন ভোটগ্রহণ চলবে। এবারের নির্বাচনে মোট ৭ হাজার ৮৮৩ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। নির্বাচন নিয়ে নানার অভিযোগ থাকলেও অংশ নিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেল নীল দল। অন্যদিকে, নির্বাচন নিয়ে সরব আওয়ামীপন্থি সাদা প্যানেলের আইনজীবীরা। ভোট সুষ্ঠু হবে বলে আশাবাদী দুই প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকরা। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দৃষ্টি সবার সর্বোচ্চ আদালতের দিকে।

 

নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুরে এক ঘণ্টা (১টা থেকে ২টা পর্যন্ত) বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। দুই দিনব্যাপী এ নির্বাচনে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হবে। এরপর ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।’কাযর্করী কমিটির সভাপতি পদে একটি, সহ-সভাপতি পদে দুটি, সম্পাদক পদে একটি, কোষাধ্যক্ষ পদে একটি, সহ-সম্পাদক পদে দুটি এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে সাতটিসহ মোট ১৪টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

নির্বাচনে সাধারণত সরকার-সমর্থক (সাদা) ও বিরোধীদের (নীল) প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার সরকার-সমর্থকদের প্যানেলের সিদ্ধান্তের বাইরে সভাপতি ও সম্পাদক পদে আরও দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও ট্রেজারার পদে রয়েছেন একজন।আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এটার অর্থ এই নয় যে আগের ইলেকশনগুলো স্বচ্ছ ছিল না। আমরা সুন্দর আলোকিত দিনের প্রত্যাশায় কাজ করছি। এজন্য প্রার্থী, প্রধান বিচারপতি, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীসহ সবার সহযোগিতা লাগবে।’

 

নির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ (সাদা প্যানেল হিসেবে পরিচিত) মনোনীত প্যানেলে সভাপতি পদে আবু সাঈদ সাগর, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, সহ-সভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, সহ-সম্পাদক পদে মো. হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হুমায়ন কবির প্রার্থী হয়েছেন।

 

সদস্য সাতটি পদে প্রার্থী হয়েছেন- মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূইয়া, মাহমুদা আফরোজ, মো. বেলাল হোসেন, খালেদ মোশাররফ, মো. রায়হান রনি, সৌমিত্র সরদার ও রাশেদুল হক খোকন।বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের (নীল প্যানেল হিসেবে পরিচিত) প্রার্থীরা হচ্ছেন- সভাপতি পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন (খোকন), সম্পাদক পদে মো. রুহুল কুদ্দুস, সহ-সভাপতি পদে মো. হুমায়ুন কবির ও সরকার তাহমিনা বেগম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. রেজাউল করিম, সহ-সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান ও মো. আব্দুল করিম প্রার্থী হয়েছেন।

 

সদস্য সাতটি পদে ফাতিমা আক্তার, সৈয়দ ফজলে এলাহী, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. রাসেল আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, মহিউদ্দিন হানিফ ও মো. ইব্রাহিম খলিল প্রার্থী হয়েছেন।দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে মো. ইউনুছ আলী আকন্দ ও মো. খলিলুর রহমান বাবলু (এম কে রহমান)। সম্পাদক পদে নাহিদ সুলতানা যুথী ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভুইয়া এবং মো. সাইফুল ইসলাম কোষাধ্যক্ষ পদে প্রার্থী হয়েছেন। সমিতির গত (২০২৩-২৪) নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপ-কমিটির আহ্বায়ক নিয়ে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের আপত্তি এবং এর জেরে ভাঙচুর, পুলিশের পিটুনি, হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির মধ্য দিয়ে গত বছরের ১৫ ও ১৬ মার্চ ভোট হয়। অবশ্য সেই নির্বাচন আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জনের ঘোষণা না দিলেও নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি তোলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। গত বছরের ১৭ মার্চ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফলে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪টি পদের সব কটিতেই জয় পান আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের আইনজীবীরা।