রাজধানীর মৌচাকস্থ ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেজমেন্ট পার্কিংয়ে parked একটি প্রাইভেটকার থেকে জাকির হোসেন ও মিজানুর রহমান নামের দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের পরিবার দাবি করেছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে মরদেহ গ্রহণ করতে আসেন নিহতদের স্বজনরা। তবে পুলিশ এখনও হত্যার কোনও সরাসরি প্রমাণ পায়নি এবং তদন্ত চলমান রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই প্রাইভেটকারটি ভাড়ায় চালানো হত। রোববার (১০ আগস্ট) ভোরে গাড়িটি ঢাকায় ওই হাসপাতালে একজন রোগী নিতে আসে। এরপর গাড়িটি হাসপাতালের বেজমেন্ট পার্কিংয়ে রাখা হয় এবং আর বের হয়নি। পরদিন সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ গাড়ির মধ্যে দুই ব্যক্তির মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ফারুক জানান, ঘটনার বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যদি হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে হত্যা মামলা করা হবে।
তবে মৃতদেহ নিতে আসা স্বজনরা বলছেন, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যা।
জাকিরের পরিবার জানায়, দুই বছর আগে আমেরিকা যাত্রার জন্য পল্টনের একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা জাকির জমা দিয়েছিলেন। তবে এজেন্সি আমেরিকা পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ায় টাকা ফেরত দেয়নি। চলতি মাসের ১০ আগস্ট টাকা ফেরতের কথা ছিল, কিন্তু এর পরদিনই জাকির ও তার বন্ধুর মরদেহ উদ্ধার হয়।
জাকিরের বাবা মো. আবু তাহের বলেন, টাকা ফেরতের দাবিতে আগেও জাকিরকে মারধর করা হয়েছিল। তাদের ধারণা, ট্রাভেল এজেন্সির সংশ্লিষ্টরাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
অপরদিকে, মিজানুরের ভাগনে জানান, মিজানুর মাছের খামারের ব্যবসা করতেন এবং কোনও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। জাকির প্রাইভেটকার চালাতেন এবং প্রায়ই মিজানুরকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। শনিবার রাতে তারা গাড়ির মালিক ও তার স্ত্রীর ভাইকে (শ্যালক) নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। শ্যালক ওই রাতে বিদেশে চলে যান। পরদিন তাদের একটি গ্রামের রোগীকে হাসপাতালে আনার কথা ছিল। এরপর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা।
গাড়ির মালিক জানিয়েছেন, রোববার ভোরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আত্মীয়কে দেখতে আসেন। পরে তিনি বের হয়ে গেলেও চালক জাকির ও মিজানুর গাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
ডিএমপির রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, সিআইডি ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ দল এখন তদন্ত করছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত ও তদন্ত শেষে স্পষ্ট হবে এটি হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কোনও ঘটনা।
রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ জানিয়েছেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গতকাল সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতালের বেজমেন্ট থেকে এই দুই মরদেহ উদ্ধার করে রমনা থানার পুলিশ। নিহত দুজনের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায়।