বগুড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পর্শে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে অন্তত ৩০ জনকে। এ ছাড়া আরও আহত ২০ জন চিকিৎসা নেন হাসপাতালের বাইরে। গতকাল রোববার বিকেলে শহরের সেউজগাড়ী আমতলা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন– বগুড়া সদরের কুড়িল এলাকার অতশী রানী (৪০), আদমদীঘির নরেশ মোহন্ত (৫০), শাজাহানপুরের রঞ্জিতা মোহন্ত (৩৭) ও সন্ধ্যা রানী (৩৬) এবং শেরপুরের অলোক রায় (৩৫)। আহতদের শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সেউজগাড়ী শ্রীশ্রী ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রাটি বের হয় বিকেল ৫টায়। ১৫ মিনিট পথ অতিক্রম করার পর সেটি আমতলা এলাকায় পৌঁছে। এ সময় স্টেশন সড়কে রথের চূড়াটি সড়কের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় উচ্চ ক্ষমতার বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসে। রথের চূড়াটি স্টিলের হওয়ায় বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে এতে আগুন ধরে যায়। এ সময় রথে ও আশপাশে থাকা অন্তত অর্ধশত মানুষ আহত হন। এর মধ্যে ৩৫ জনকে হাসপাতালে নিলে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। সেউজগাড়ী শ্রীশ্রী ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রাটি পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন শিবমন্দির অভিমুখে রওনা করেছিল।
।’
বগুড়া শহর পূজা উদযাপন কমিটির সহসভাপতি পরিমল প্রসাদ রাজ জানান, অন্তত সাড়ে ১৪ হাজার মানুষ গতকাল সেউজগাড়ীর রথযাত্রায় অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘রথের চূড়া বিদ্যুতের তারে লাগার সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। এতে অনেকের শরীরে আগুন লাগে, তারা চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে সড়কে পড়ে যান। অনেকে কাতরাতে থাকেন। ভয়ে ও আতঙ্কে সবাই দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন।’ পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি টিম এসে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানান তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিপুল কুমার বলেন, ‘রথের দড়ি ধরে টানছিলাম। হঠাৎ শরীরে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দেয়। কোথায় থেকে কী হলো বুঝতে পারিনি। জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে।’আহতদের সুস্থ করতে সার্বিক চেষ্টা চালানোর কথা জানিয়েছেন বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সাগর কুমার রায়। শহীদ জিয়া হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, গুরুতর আহতদের বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা চলছে।
এই রথযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। তিনি বলেন, ‘এটি সনাতন ধর্মের অন্যতম বড় উৎসব। সেই উৎসবের মধ্যে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল। এখন আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’