ভিটাবাড়ি হারিয়ে বারবার পথে বসেছে তিস্তাপাড়ের মানুষ

প্রকাশকালঃ ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩১ অপরাহ্ণ ৪৮৮ বার পঠিত
ভিটাবাড়ি হারিয়ে বারবার পথে বসেছে তিস্তাপাড়ের মানুষ

ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

 

 

বসতভিটা হারিয়ে দিশেহারা কুড়িগ্রামের তিস্তাপাড়ের মানুষ। তিস্তার ভাঙন প্রতিনিয়ত তীব্র আকার ধারণ করেছে।
 

 

"স্বামীর ভিটা গেছে। এবার শ্বশুরের ভিটা গেলো। এখন আমরা কই যামু.? আপনেরা আমাদের থাকোনের ব্যবস্থা করেন।" এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাবখাঁ গ্রামের গৃহবধূ নাজমা বেগম।

 

 

তার স্বামী ছমির উদ্দিন বলেন, "এই নিয়া তিনবার বাড়ি ভাঙলো। এখন থাকোনের কোনো জায়গা নাই। আমাগো বাঁচান।"

 

গত ১৫ দিন ধরে তিস্তা নদীর ভাঙনে সরিষাবাড়ী শ্যালোঘাট থেকে পূর্বে চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত তীব্র ভাঙন চলছে। ভাঙন প্রতিরোধে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুদিকে জিওব্যাগ ফেলানো হলেও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

 

 

এলাকার সাবেক মেম্বার শহিদুল আলম জানান, গত ১৫ দিনে ৯টি বাড়ি ভেঙেছে। একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫০-৬০টি বাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করলেও তারা কর্ণপাত করছেন না।

 

হামিদ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ‘আমার এক একর আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন চাষযোগ্য জমি নেই। ছেলেমেয়ে নিয়ে এখন পথে বসার মতো অবস্থা।

 

স্থানীয় জাহেদা বেগম বলেন, "নদী ভাঙতে ভাঙতে শেষ মাথায় চলে আসছে। এখন মানুষের হাত-পা ধরেও থাকোনের (থাকার) জায়গা পাইছি (পা) না। কই যামু আপনেরা কন.?"

 

ভাঙনকবলিতদের জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ প্রামাণিকের বাড়িতে গেলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, "৬-৭টা বাড়ি ভাঙার খবর করার জন্য সাংবাদিক লাগে.? আপনারা কোনো কাজ করেন না.? শুধু বিরক্ত করতে আসেন। আমি কোনো বক্তব্য দেবো না। এমন ভাঙন কতো হয়।"

 

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, 'বাজেট সংকটের কারণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দিতে পারছি না। তবে স্কুলটি রক্ষায় ৩০০ জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরও জিওব্যাগের জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে।'