ঢাকা প্রেস নিউজ
বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ হিসেবে স্বীকৃত জন আলফ্রেড টিনিসউড ১১২ বছর বয়সে মারা গেছেন। গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টের একটি সেবাযত্ন কেন্দ্রে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সেখানেই তিনি বসবাস করতেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।
চলতি বছরের এপ্রিলে ১১৪ বছর বয়সী হুয়ান ভিসেন্ট পি রেজ মোরার মৃত্যুর পর জন আলফ্রেডকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গিনেস। তার পরিবার জানায়, জীবনের শেষ দিনগুলো সংগীত এবং ভালোবাসায় ঘেরা ছিল।
জন টিনিসউডের জন্ম ১৯১২ সালের ২৬ আগস্ট, যুক্তরাজ্যের লিভারপুলে। একই বছর বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজ ডুবে যায়। ২০২০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষের খেতাব পান।
জন আজীবন লিভারপুল ফুটবল দলের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। ১৯০১ ও ১৯০৬ বাদে ক্লাবটির সব গুরুত্বপূর্ণ ট্রফি জয়ের সাক্ষী ছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জন ছিলেন রয়্যাল আর্মি পেস কোরে। সেখানে হিসাবরক্ষণ, খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থাপনা এবং আটক সেনাদের শনাক্ত করার মতো কাজ করতেন। যুদ্ধ শেষে তিনি রয়্যাল মেইল, শেল ও বিপি তে হিসাবরক্ষকের কাজ করেন। অবসর নেন ১৯৭২ সালে।
জনের স্ত্রী ব্লডওয়েনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় লিভারপুলের একটি নাচের অনুষ্ঠানে। ১৯৪২ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একমাত্র কন্যা সুজানের জন্ম ১৯৪৩ সালে। ব্লডওয়েনের মৃত্যু হয় ১৯৮৬ সালে।
জনের পরিবার জানান, তিনি বুদ্ধিমান, বিচক্ষণ, সাহসী এবং সদালাপী ছিলেন। তার গুণাবলির জন্যই জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তিনি দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পেরেছেন।
একবার বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জন বলেছিলেন, “আমি অন্যদের থেকে আলাদা নই। আপনি হয়তো দীর্ঘজীবী হবেন, আবার কম সময়ও বাঁচতে পারেন। এটি আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।”
১০০তম জন্মদিনের আগেই জন সাউথপোর্টের একটি কেয়ার হোমে বসবাস শুরু করেন। ১০০ বছর বয়স থেকে প্রতি জন্মদিনে তিনি ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে শুভেচ্ছা কার্ড পেতেন। রানি এলিজাবেথের মৃত্যুর পর এই শুভেচ্ছা কার্ড পাঠানোর ঐতিহ্য অব্যাহত রাখেন রাজা তৃতীয় চার্লস।
বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ হিসেবে এখনও স্বীকৃত জাপানের জিরোইমন কিমুরা, যিনি ১১৬ বছর ৫৪ দিন বেঁচেছিলেন। বর্তমানে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হলেন জাপানের ১১৬ বছর বয়সী তোমিকো ইতোকা।