বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং এটি ইতোমধ্যেই উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে, জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করছে। সন্ধ্যার মধ্যে এটি পুরোপুরি উপকূল অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ৫০ কিমি/ঘণ্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা দমকা হাওয়ার আকারে ৬০ কিমি/ঘণ্টায় পৌঁছায়।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনাসহ ১৪টি জেলার উপকূল ও চরাঞ্চলে ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এর পাশাপাশি সেন্টমার্টিন দ্বীপে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার পানি দেখা গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সম্ভাবনাও রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, এই বৃষ্টির প্রভাবে উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলের কিছু নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে শনিবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমে আসতে পারে, বিশেষত রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটেও লঞ্চ চলাচল স্থগিত করেছে বিআইডব্লিউটিএ। তবে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১২০ ঘণ্টায় দেশের আটটি বিভাগেই হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত, দমকা হাওয়া ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে অতি ভারী বর্ষণও হতে পারে। ফলে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১–২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে।