আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় ৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন নিহতদের স্বজনসহ বিক্ষুব্ধ জনতা।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চর ফুলবাড়ি এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে রৌমারী থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন মিছিলে আসা লোকজন। ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’—এমন নানা স্লোগান দেন তারা।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা প্রশাসন চত্বরে মানববন্ধন করেন সংক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও নিহতদের স্বজনরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- নিহত বুলু মিয়ার মেয়ে শাপলা বেগম, বোন শরিফা খাতুন, নিহত ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলুরানী, নিহতদের স্বজন ও মামলার বাদী শাহাজামাল, স্থানীয় ওয়াজেদ আলী, আব্দুল আজিজ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ট্রিপল মার্ডার ঘটনার তিন আগে শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে গরু দিয়ে ধানের চারা খাওয়াকে কেন্দ্র করে মামলার বাদী শাহাজামালের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় প্রতিপক্ষ রব্বানীর ছেলে আপেল মিয়া, রাজু মিয়াসহ ১০-১৫ জনের একটি দল। ওই দিনের হামলায় আহত হন শাহাজামালের স্ত্রী নুরজাহান বেগমসহ ৫ জন। পরে তাদের রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ওই দিনই রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন নির্যাতনের শিকার নুরজাহান বেগম। ঘটনার সত্যতা থাকা সত্ত্বেও মামলা রেকর্ড করা হয়নি।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রতিপক্ষের লোকজন বেপরোয়া হয়ে পরিকল্পিতভাবে পুনরায় হামলা চালিয়ে এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তারা আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও দায়িত্বে অবহেলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে জমি নিয়ে বিরোধে রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভুন্দুরচর গ্রামের শাহজামাল গ্রুপের সঙ্গে একই গ্রামের রব্বানী গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় শাহাজামালের দুই ভাই ফুলবাবু (৪৩), বুলু মিয়া (৫২) ও ভাতিজা নুরুল আমিন (২৭) নিহত হন। আহত হন উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় নিহতদের স্বজন শাহাজামাল মিয়া বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান অভিযুক্ত রাজু মিয়াসহ, আপেল মিয়া, সিবেনী বেগম, কিনেজা খাতুন ও নুর মোহাম্মদ নামের ৫ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।