দীর্ঘ ১৬ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ১৭৮ জন বিডিআর সদস্য।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন, কাশিমপুর-১ কারাগার থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর-২ থেকে ৮৯ জন এবং কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি সেল থেকে ১২ জনসহ মোট ১৭৮ জন সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে বুধবার কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগারে তাঁদের জামিননামা পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে অন্য কোনো মামলায় আটকাদেশ না থাকার শর্তে তাঁদের মুক্তি নিশ্চিত করা হয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে ভয়াবহ বিদ্রোহ ঘটে। এতে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই ঘটনার পর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়।
হত্যা মামলা:
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর হত্যা মামলার রায়ে ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয়। এতে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন, এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৭৮ জন আসামি খালাস পান।
আপিল ও উচ্চ আদালতের রায়:
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া ২৮৩ জন খালাস পান।
তবে, মামলার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় ৫৪ জন আসামি মারা যান। হত্যার রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল করেন, আর রাষ্ট্রপক্ষ খালাসপ্রাপ্ত ৮৩ জনের বিষয়ে আপিল করেছে।
২০১০ সালে ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলার বিচারকাজ শুরু হলেও তা মাঝপথে স্থগিত হয়ে যায়। ফলে মামলাটি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে।
২০২3 সালের ২৪ ডিসেম্বর সরকার পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুনঃতদন্তের জন্য আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে। কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
এই দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে ১৭৮ জন বিডিআর সদস্য কারামুক্ত হচ্ছেন, যা তাঁদের পরিবারের জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে।