ঢাকা প্রেস নিউজ
টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর কাকরাইল মসজিদ এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে পুলিশ ও র্যাব। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে সকাল থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, কাকরাইল মসজিদ ও আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
র্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম জানিয়েছেন, টঙ্গী ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় কাকরাইল মসজিদ ও ঢামেক এলাকায় র্যাব-৩ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
এর আগে, টঙ্গীতে তাবলীগ জামাতের জুবায়ের ও সাদপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখল নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাচ্চু মিয়া (৭০) এবং ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০) রয়েছেন। অপর একজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুর রউফ (৫৫), ময়মনসিংহের মজিবুর রহমান (৫৮), সাভারের ফয়সাল (২৮), নরসিংদীর তরিকুল (৪২), চট্টগ্রামের সাহেদ (৪৪) সহ আরও বেশ কয়েকজন।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৩টার দিকে সাদপন্থীরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। এ সময় ময়দানের ভেতর থেকে জুবায়েরপন্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পাল্টা হামলা চালানোর পর উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়, যার ফলে বহু হতাহত হয়।
সাদপন্থীদের একজন প্রভাবশালী মুরুব্বি মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, "আমরা এখন ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণে আছি। জুবায়েরপন্থীদের আক্রমণে আমাদের তিন ভাই শহীদ হয়েছেন।" তিনি দাবি করেন যে, ময়দানে অনেক জুবায়েরপন্থী চাকু ও ছোড়া নিয়ে আটক হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের ফলে হতাহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার হাফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, "এ পর্যন্ত তিনজন নিহত এবং অসংখ্য লোক আহত হয়েছেন।"
সকাল ৮টা পর্যন্ত এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল এবং হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।