অনলাইন ডেস্ক:-
হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়, যা বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এই ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। (সূত্র: রয়টার্স)
জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া
বৈঠকের পর এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া পোস্টে জেলেনস্কি লেখেন, "ধন্যবাদ, আমেরিকা। আমাদের সমর্থন করার জন্য, আমাদের পাশে থাকার জন্য, এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস ও জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইউক্রেনের শান্তি প্রয়োজন, এবং আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।"
বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, "রাশিয়া অবৈধভাবে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেন সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করছে, যা আমাদের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনের শান্তির জন্য কানাডা সবসময় তাদের পাশে থাকবে।"
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেন, "ইউক্রেনের জনগণের চেয়ে কেউ শান্তি বেশি চায় না। আমরা ন্যায়সংগত শান্তির পথ খুঁজছি এবং ইউক্রেন আমাদের ওপর নির্ভর করতে পারে।"
পর্তুগালে সফররত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো জানান, "রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের জনগণ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিন বছর আগে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করা কঠিন ছিল, কিন্তু আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা ও জাপানসহ যারা ইউক্রেনকে সাহায্য করেছে, তাদের সম্মান জানাতে হবে। তারা ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছে।"
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, "পশ্চিমা দেশগুলোর বিভাজন আমাদের দুর্বল করে, যা আমাদের সভ্যতার জন্য হুমকি। সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মিত্রদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করা প্রয়োজন।"
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, "যুক্তরাজ্য সবসময় ইউক্রেনের পাশে থেকেছে এবং কিয়েভের জন্য শান্তির পথ খুঁজতে কাজ করবে।"
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানান, "যতদিন প্রয়োজন, ততদিন ইউক্রেনের পাশে থাকব। এটি গণতন্ত্র বনাম স্বৈরাচারের লড়াই।"
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, "শক্তিশালী নেতারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন, দুর্বলরা যুদ্ধ বাঁধান। ট্রাম্প সাহসী অবস্থান নিয়েছেন।"
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোককে রাসমুসেন বলেন, "বন্ধুদের মধ্যে দৃঢ় আলোচনা হতে পারে, কিন্তু ক্যামেরার সামনে তা ঘটলে একমাত্র বিজয়ী হয় ক্রেমলিন।"
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন জেলেনস্কিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, "আপনার মর্যাদা ইউক্রেনীয় জনগণের সাহসিকতার প্রতিফলন। আপনি কখনো একা নন।"
মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দু বলেন, "রাশিয়া আগ্রাসন চালিয়েছে, ইউক্রেন তাদের স্বাধীনতা রক্ষা করছে। আমরা তাদের পাশে আছি।"
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, "প্রিয় জেলেনস্কি, প্রিয় ইউক্রেনীয় বন্ধুরা, আপনারা একা নন।"
বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়াগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন এখনও সুদৃঢ়। তবে হোয়াইট হাউসে সাম্প্রতিক এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।