দেশের ১০টি প্রতিষ্ঠান পোশাক রপ্তানির আড়ালে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পাচার করেছে বিদেশে
প্রকাশকালঃ
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:০৫ অপরাহ্ণ ২২৬ বার পঠিত
দেশের ১০টি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পোশাক রপ্তানির আড়ালে ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ ডলার বা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ১০টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড, ফ্যাশন ট্রেড, এম ডি এস ফ্যাশন, হংকং ফ্যাশনস লিমিটেড, থ্রি-স্টার ট্রেডিং, ফরচুন ফ্যাশন, অনুপম ফ্যাশনওয়্যার লিমিটেড, পিক্সি নিটওয়্যারস লিমিটেড, স্টাইলাইজ বিডি লিমিটেড ও ইডেন স্টাইল টেক্স।
এতে বলা হয়, অভিনব কায়দায় রপ্তানি জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্যের চালান বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, কিন্তু রপ্তানি আয়ের সেই বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবসিত হচ্ছে না, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর তদন্ত করে এই অর্থ পাচারের ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিল অব এক্সপোর্ট জালিয়াতি করে অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করেছে এবং বিল অব এক্সপোর্টের ২৪ নম্বর কলামে নমুনার কোড ২০ ব্যবহার করেছে। এ ক্ষেত্রে কোনো অর্থ দেশে প্রত্যাবসিত না হয়ে পুরো চালানের রপ্তানিমূল্য বাবদ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ও বিধিবহির্ভূত কোড ব্যবহারের মাধ্যমে রপ্তানির একাধিক ঘটনা সম্প্রতি কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর উদ্ঘাটন করেছে।
১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিগত সময়ে ১ হাজার ২৩৪টি পণ্যচালানে এমন জালিয়াতি করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। ১ হাজার ২৩৪টি চালানে ৯ হাজার ১২১ মেট্রিক টন রপ্তানি হয়েছে, যার প্রত্যাবাসনযোগ্য বিদেশি মুদ্রার সম্ভাব্য পরিমাণ ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ১১৮ মার্কিন ডলার (৩০০ কোটি টাকা)।
শুল্ক গোয়েন্দারা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট দলিল পর্যালোচনা করে দেখেছেন, এসব প্রতিষ্ঠান টি-শার্ট, টপস, নারীদের পোশাক, ট্রাউজার, বেবি সেট, পোলো শার্ট প্রভৃতি পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব, নাইজেরিয়া প্রভৃতি দেশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি দেখিয়ে অর্থ পাচার করেছে। ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মূলত বিল অব এক্সপোর্টে লেনদেনের প্রকৃতির ঘরে কোড ২০ ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফখরুল আলম বলেন, এই বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পাচারকারীরা কোনো ছাড় পাবেন না।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিল অব এক্সপোর্ট পর্যালোচনায় বিল অব এক্সপোর্ট ও ইএক্সপিতে বর্ণিত তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া বিল অব এক্সপোর্টে উল্লেখিত সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১০ প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই সেই ব্যাংকে লিয়েনকৃত নয়। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে সাউথইস্ট ব্যাংক সম্পর্কিত নয় বলে সেই ব্যাংকের মাধ্যমে বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সেলস কন্ট্র্যাক্ট বা ইএক্সপির রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবসিত হয়নি বা হওয়ার সুযোগও নেই।