রাজশাহীর চারঘাটে খাস জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা: স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের আশঙ্কা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৭ অক্টোবর ২০২৫ ০১:৪৯ অপরাহ্ণ   |   ২৬৬ বার পঠিত
রাজশাহীর চারঘাটে খাস জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা: স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের আশঙ্কা

মোঃশফিকুল ইসলাম, চারঘাট (রাজশাহী):-

 



 

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ভায়ালক্ষিপুর ইউনিয়নের পুঠিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
 

গতকাল সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, বাজার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়ের পাশে থাকা সরকারী খাস জমিতে বহু বছর ধরে সাপ্তাহিক হাট বসে আসছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই জমিই সরকারী খাস জমি, যেখানে সরকার রাজস্বও পায়। কিন্তু সম্প্রতি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই জায়গায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করলে বিরোধ দেখা দেয়। পরে স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
 

ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমির বাইরে গিয়ে সরকারী খাস জমি দখল করে প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। তারা দাবি করেন, বিদ্যালয়ের নির্ধারিত জমির ভেতরেই প্রাচীর নির্মাণ করা হোক।
 

স্থানীয় সবজি বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন,

“বিদ্যালয়ের জমি প্রায় ১.৩৫ একর, পাশাপাশি সরকারী খাস জমিও প্রায় একই পরিমাণ। আমরা ৩০ বছর ধরে এই জায়গায় হাট বসতে দেখছি। এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ এটিকে নিজেদের দাবি করে প্রাচীর তুলছে। আমরা এটা হতে দেব না—প্রয়োজনে জীবন দিয়েও প্রতিরোধ করব।”

চা বিক্রেতা বজলুর রহমানের ভাষায়,

“এখান থেকে সরকার রাজস্ব পায়। তাহলে কার স্বার্থে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খাস জমির ওপর প্রাচীর তুলছে? তারা যদি জোর করে দেয়, আমরা পরিবারের সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়ব।”

এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন যেন দ্রুত সরকারি সার্ভেয়ার নিয়োগ করে প্রকৃত জমির সীমারেখা নির্ধারণ করে এবং বিদ্যালয়ের জমির ভেতরেই প্রাচীর নির্মাণ নিশ্চিত করে।
 

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাপিয়া খাতুন বলেন,

“আমরা পুরোপুরি বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমির মধ্যেই প্রাচীর নির্মাণ করছি। কোনো খাস জমি দখল করা হচ্ছে না। বরং বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনই রয়েছে খাস জমির অংশে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন,

“বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাচীরটি যদি খাস জমির ওপর হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং স্থানীয়রা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।