রাজাপুর হানাদারমুক্ত দিবস আজ

প্রকাশকালঃ ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৩:১৮ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
রাজাপুর হানাদারমুক্ত দিবস আজ

ঢাকা প্রেস,ঝালকাঠি প্রতিনিধি:-
 

আজ ২৩ নভেম্বর, ঝালকাঠির রাজাপুরে পালিত হচ্ছে হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদারদের পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাপুর থানা শত্রুমুক্ত করেন। এই ঐতিহাসিক দিনে রাজাপুরের আকাশে উড়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা, যা বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের স্বাধীনতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
 

১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী রাজাপুর থানায় আক্রমণ চালায়। শুরু হয় তীব্র সম্মুখযুদ্ধ। রাতভর যুদ্ধ শেষে, ২৩ নভেম্বর ভোররাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে রাজাপুর থানা শত্রুমুক্ত হয় এবং বন্ধ হয় গণহত্যার নির্মম অধ্যায়।
 

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছিল। রাজাপুর থানা ছিল ৯ নম্বর সেক্টরের অধীন বরিশাল সাব-সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। এই সাব-সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমর, যিনি মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য "বীর উত্তম" খেতাব লাভ করেন। রাজাপুরের কানুদাসকাঠিতে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের একটি ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন। রাজাপুর থানার সম্মুখযুদ্ধে শাহজাহান ওমর আহত হলেও তার সাহসী নেতৃত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।
 

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণায় উঠে আসে সেই সময়ের ঘটনাবলি। শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে কেরামত আলী আজাদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাপুর থানায় আক্রমণ চালান। ওই যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক ও হোসেন আলী শহীদ হন, আহত হন অন্তত ২০ জন। যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রায় ৩০০ সদস্য সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
 

মুক্তিযুদ্ধের এই স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো এখনও যথাযথভাবে সংরক্ষিত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত এসব স্থান সংরক্ষণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন।
 

আজকের এই দিনে রাজাপুরবাসী তাদের সাহসী পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে গৌরবের সেই ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছেন।