এমপির বাড়ি দখল করে আশ্রম চালু: সমন্বয়ক পরিচয়ধারী নারী গ্রেপ্তার
প্রিন্ট করুন
প্রকাশকালঃ
১০ মার্চ ২০২৫ ০২:৪১ অপরাহ্ণ
|
১০২ বার পঠিত
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:-
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের ছয়তলা ভবন দখল, ভাঙচুর, লুটপাট এবং ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মিষ্টি জেলার বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের জশিহাটী গ্রামের মাজহারুল ইসলামের মেয়ে। তার স্বামীর নাম শাহ আলমাস। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল শহরের আকুরটাকুর পাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
বাড়ি দখলের ঘটনা.....
গত শনিবার দুপুরে, নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে মিষ্টি মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জনকে নিয়ে শহরের ছোট কালিবাড়ীতে অবস্থিত জোয়াহেরুল ইসলামের ছয়তলা ভবনের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন। এতে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পর রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে বাড়িটি দখলমুক্ত করা হয় এবং মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের সরিয়ে নেওয়া হয়। সেই সময় মিষ্টিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হলেও গভীর রাতে মুচলেকার মাধ্যমে তিনি মুক্তি পান।
মামলা দায়ের ও অভিযোগ.....
রোববার রাত ৮টার দিকে জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, মিষ্টির নেতৃত্বে ৮-৯ জন ব্যক্তি পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাড়ির কলাপসিবল গেটের ছয়টি তালা ভেঙে প্রবেশ করে বাড়িটি দখল নেয়। এরপর তারা বাসার ভেতরে লুটপাট চালিয়ে নগদ পাঁচ লাখ টাকা, ১০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে এবং প্রায় ৫০ লাখ টাকার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে মিষ্টিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং টাকা দিতে ব্যর্থ হলে বাড়িটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
প্রশাসনের বক্তব্য
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফ বলেন, "মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক নারী অবৈধভাবে সাবেক সংসদ সদস্যের বাড়িটি দখল করে সেখানে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে বাড়িটি দ্রুত দখলমুক্ত করা হয় এবং মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের পূর্বের আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। সরকার তাদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "অভিযুক্ত নারী দোষ স্বীকার করে মুচলেকা দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে তিনি আর এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবেন না। মানবিক বিবেচনায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে, পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পদ দখল বা ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো কোনো কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
গ্রেপ্তার ও পরবর্তী ব্যবস্থা.....
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহমেদ জানান, দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে মিষ্টিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার সকালে তাকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। একইসঙ্গে, তার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।