মসজিদে পানাহার করার শর্তসমূহ

প্রকাশকালঃ ১০ জুন ২০২৩ ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ ১০৪ বার পঠিত
মসজিদে পানাহার করার শর্তসমূহ

সজিদে খাবার খাওয়া শর্তসাপেক্ষে বৈধ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে পানাহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। আবদুল্লাহ বিন হারেস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে মসজিদে রুটি ও গোশত খেতাম।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৬৬৯)

অন্য হাদিসে এসেছে, জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) প্রত্যেক কর্তিত খেজুর থেকে ডালাসহ মিসকিনদের জন্য ১০ উসুক (১,৩০৪.১৬ কিলোগ্রাম) মসজিদে লটকিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৬৪)

এ ছাড়া অসংখ্য হাদিস থেকে জানা যায়, আসহাবুস সুফফার শিক্ষার্থীরা মসজিদে থাকতেন। তাঁরা মসজিদে পানাহার করতেন। তা ছাড়া তাবুক যুদ্ধের পর তিন ব্যক্তিকে মসজিদে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাঁদের জন্য মসজিদেই পানাহারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।


তাঁদের ঘটনা সুরা তাওবার ১১৭ ও ১১৮ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। আর ইতিকাফের সময় মসজিদে খাওয়াদাওয়া করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এসব বিবরণ থেকে জানা যায়, মসজিদে প্রয়োজনে পানাহার করা যাবে। তবে সেটি শর্তহীন নয়।

মসজিদে পানাহারের জন্য কয়েকটি শর্ত আছে। সুতরাং আদব রক্ষা করে মসজিদে পানাহার করা যাবে। আর মসজিদে ইফতার বৈধ হওয়ার ব্যাপারে পৃথিবীর কোনো আলেমের দ্বিমত নেই। তবে হ্যাঁ, সেটাও করতে হবে মসজিদের আদব রক্ষা করে।

মসজিদে পানাহার করার শর্তসমূহ:
১. দাঁড়িয়ে পানাহার করা যাবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যেন দাঁড়িয়ে পান না করে...।’ (মুসলিম, হাদিস : ২০২৪-২০২৫)

২. মসজিদে দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু, যেমন: পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি প্রবেশ করানো নিষিদ্ধ। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এই দুর্গন্ধযুক্ত বৃক্ষ (পেঁয়াজ, রসুন) থেকে খাবার গ্রহণ করবে, সে যেন আমার মসজিদে না আসে।’ (বুখারি, হাদিস : ৮৫৩)

৩. মসজিদে এমন শব্দ করে খাওয়া যাবে না বা এমন জোরে কথা বলা যাবে না, যার ফলে অন্যের নামাজ ও তাসবিহর ক্ষতি হয়। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর মসজিদে তাঁর নাম স্মরণ করতে বাধা দেয় এবং তার বিনাশসাধনের চেষ্টা করে, তার চেয়ে বড় জালিম আর কে? অথচ ভয়-বিহ্বল না হয়ে তাদের জন্য মসজিদে প্রবেশ করা সংগত ছিল না। পৃথিবীতে তাদের জন্য লাঞ্ছনা ভোগ ও পরকালে তাদের জন্য মহাশাস্তি আছে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১১৪)

৪. মসজিদে খাবার রেখে গিয়ে মসজিদকে অপরিচ্ছন্ন করা যাবে না। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘরসমূহে (মহল্লায়) মসজিদ নির্মাণ করতে বলেছেন এবং সেগুলোকে পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিযুক্ত রাখতে বলেছেন।’ (আবু দাউদ, নম্বর : ৪৫৫; তিরমিজি, নম্বর : ৫৯৪)