আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় হরিশ্বর ডারা খালের উপর নির্মিত আরসিসি গার্ডার ব্রিজ চালুর মাত্র ১০ মাসের মাথায় সংযোগ রাস্তায় পশ্চিম অংশে ধস দেখা দিয়েছে। সোয়া ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬৪ মিটার দীর্ঘ এই সেতুুটি গত বছরের নভেম্বর মাসে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। গত ২৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ভারী বর্ষণের পর এই ধসের ঘটনা ঘটে, যার ফলে সেতু দিয়ে যান চলাচল এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর পশ্চিম পাশে সংযোগ সড়কের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় সড়কের ইটের সোলিং ভেঙে পড়েছে। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ধসে যাওয়া অংশটি দিনদিন আরও বড় হচ্ছে। দ্রুত সংস্কার না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতা মিনাবাজার এলাকার বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, বৃষ্টির পর সড়কের দুধারের নিচের মাটি ধসে গেছে। এতে রাস্তার ওপর বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখনই সংস্কার করা না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি সেতু নির্মাণে নিম্নমানের কাজ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
চিলমারী উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে শরীফের হাট-কাশিম বাজার সড়কের হরিশ্বর ডারা খালের উপর ৬৪ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল। তবে সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় নির্মাণের মেয়াদ বাড়ানো হয়। অবশেষে গত বছরের নভেম্বর মাসে সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় মোট ৪ কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার ১৯৩ টাকা। কাজটি সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নুফা-জেডএইচডি-জেভি। চলতি বছরের ১৯ মে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চিলমারী উপজেলা প্রকৌশলী মো. জুলফিকার আলী বলেন, ভারী বর্ষণে সেতুর সংযোগ সড়কের পশ্চিম অংশে কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। তারা সরেজমিনে তদন্ত করে রিপোর্ট দিবেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল থেকে ১০ শতাংশ সিকিউরিটি মানি কেটে রাখা হয়েছে। তারা সংস্কার না করলে সেই টাকা থেকেই কাজটি করা হবে।