ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ জানান, ছাগল চুরির মিথ্যা কথা বলে ওই তরুণীকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে এই তিন কিশোর। এ ঘটনায় শুক্রবার ভুক্তভোগীর মা থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপরই পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিশোররা ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
ওসি আরও জানান, আদালতের মাধ্যমে তাদের প্রথমে কারাগারে পাঠানো হলেও পরে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনই উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের বাসিন্দা। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।
ভুক্তভোগীর মায়ের দাবি, এক মাস আগেই তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু যৌতুক না পাওয়ায় স্বামী তাকে ছেড়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার এই তিন প্রতিবেশী তার মেয়ের সর্বনাশ করেছে।
ভুক্তভোগীর স্বজনদের দেওয়া তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার বিকেলে কয়েকজন কিশোর এসে তরুণীকে জানায় যে তাদের ছাগল চুরি হয়েছে। ছাগল খুঁজে পেতে হলে তরুণীকে তাদের সঙ্গে যেতে হবে। সরল বিশ্বাসে মেয়েটি তাদের সঙ্গে গেলে স্থানীয় লিচু মিয়ার পুকুরপাড়ে নিয়ে তাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়।
মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেন, ঘটনার পর রাতে মেয়েকে হাসপাতালে নিতে গেলে তিন কিশোরের অভিভাবকরা বাধা দেন। তারা স্থানীয়ভাবে 'বিচার-সালিশের' মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। কিন্তু তিনি তাতে রাজি না হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন এবং জড়িতদের কঠোর বিচার দাবি করেছেন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত কিশোরদের অভিভাবকরা দাবি করেছেন যে তাদের সন্তানেরা নির্দোষ এবং এমন অপকর্মে কোনোভাবেই জড়িত নয়। কেন তাদের নাম আসছে, তা তারা বুঝতে পারছেন না। একই সঙ্গে তারা ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় বাধা দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।