প্রকাশকালঃ
২৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:০২ অপরাহ্ণ ২৯৪ বার পঠিত
সিঁদুর শব্দটা শুনলেই বিবাহিতনারীদের কথাই চোখে ভেসে ওঠে। শাঁখা, সিঁদুর হিন্দুধর্মাবলম্বী নারীদের বিবাহিতজীবনের একটি প্রতীক। এই শাঁখা সিঁদুরের নানা ইতিহাস রয়েছে, রয়েছে নানান ধরনের ধারণা, রয়েছে হাজারও মত। তবে সিঁদুর পরার ভালো ও খারাপ দিকগুলো কী কী, চুলে কিংবা ত্বকে কোনো ক্ষতি করছে কিনা সেই সমস্ত সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হলো এখানে:
শুধুই কি বৈবাহিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই সিঁদুর পরা হয় নাকি এর অন্য কোনো কারণ রয়েছে?
সাধারণ মানুষদের কাছে একটাই উত্তর সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, স্বামীর মঙ্গলের জন্য বিবাহিতনারীরা সিঁথিতে সিঁদুর দেন। তবে এই কথাটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক নয়। সিঁদুর দেওয়ার নানান ধরনের বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক ব্যাখ্যা রয়েছে।
কপালে সিঁদুর প্রয়োগেরও কিছু বিধি ও ফলনির্দেশ শাস্ত্র প্রদান করে। জানা যায়, তর্জনী দিয়ে সিঁদুর পরলে শান্তি পাওয়া যায়, মধ্যমা দিয়ে ধারণ করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়। প্রাচীনকালে হলুদ গুঁড়ো দিয়ে সিঁদুর তৈরি হতো। তার পরে তাতে লাল কালি মিশিয়ে রাঙিয়ে তোলা হতো। কুঙ্কুমচর্চার কেন্দ্রবিন্দুটি হলো আজ্ঞাচক্র। এখানে সিঁদুর প্রয়োগে আত্মশক্তি বাড়ে। নারীকে ‘শক্তি’ হিসেবেই জ্ঞান করে হিন্দু পরম্পরা। কুঙ্কুম বা সিঁদুর তাদের আজ্ঞাচক্রে প্রদানের বিষয়টি সেই কথাটিকেই মনে করিয়ে দেয়।
তবে যুগে যুগে অনেক কিছু পরিবর্তনের পাশাপাশি সিঁদুর তৈরি করার পদার্থেও পরিবর্তন এসেছে যেমন বর্তমান সময়ে হলুদ, চুন, চন্দন ও খুব অল্প পরিমাণে পারদ ব্যবহার করে সিঁদুর তৈরি করা হয়। মূলত, লাল রংকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করে পারদ। তাই সিঁথিতে একদিন সিঁদুর পরলে সেখানে জল লাগলেও দুই থেকে তিন দিন সিঁদুরটা সিঁথিতে স্থায়ী থাকে। তবে প্রাচীনকাল থেকেই সিঁদুর তৈরির মূল উপকরণ হলুদ।
অনেক সময় দেখা যায় অনেক সিঁদুর দিলে সিঁথিতে প্রচুর পরিমাণে এলার্জি হতে পারে এবং অনেকের চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যায় এরকম অনেক হয়েছে যে সিঁদুর পরতে পরতে চুলের মধ্যখানটি টাক হয়ে গিয়েছে কারণ এটি রাসায়নিক পদার্থের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেই হয়েছে এমন অবস্থাতে যদি কেউ পড়ে থাকেন তার অবশ্যই সরাসরি সিঁদুর পরিবর্তন করা উচিত এবং ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
স্বাভাবিকভাবেই যেকোনো ধ্যান-ধারণার দুটো দিক থাকে। কোন দিকটি আপনি বিশ্বাস করবেন এবং কোন দিকটি করবেন না সেটা নির্ভর করছে আপনার নিজের ওপর। বিজ্ঞানমতে, নারীরা মাথার যে স্থানে সিঁদুর পরেন সেখানে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নার্ভ। ফলে সিঁদুর মেডিটেশনের জন্য সাহায্য করে থাকে।
সিঁদুর পরার সময় মাথায় একধরনের চাপ প্রয়োগ হয়, এটা একপ্রকারের ম্যাসাজ হিসেবে কাজ করে। এর ফলে মাথা ঠান্ডা থাকে ও ঘুম ভালো হয়। সিঁদুরের মধ্যে থাকা উপাদান মাথা ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করে, স্থির থাকতে সাহায্য করে। তাই, সিঁদুর শরীর ও মন দুটোর জন্যই জরুরি। তাই সিঁদুরের সিঁদুরের নানা উপকারিতা ও অপকারিতার পাশাপাশি সিঁদুর পরলে একজন নারীর সৌন্দর্য বেড়ে যায় দ্বিগুণ।