কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে ২৪ জন জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ ৮১ বছর পর তাদের নিজ দেশে নেওয়া হচ্ছে। জাপান থেকে আগত সাত সদস্যের একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ইতিমধ্যে দেহাবশেষ উত্তোলনের কাজ শুরু করেছেন। উত্তোলনকালে সৈনিকদের মাথার খুলি ও শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে ২৮ বছর বয়সী এক তরুণ সৈনিকের মাথার খুলিতে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাপানি টিম লিডার ইনোওয়ে হাসোয়েকি। এ সময় প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেস মাইকেল, কবর খনন বিশেষজ্ঞ কর্নেল সাজ্জাদ আলী জহির এবং সমন্বয়ক সাদিক হোসেন রানা উপস্থিত ছিলেন।
ইনোওয়ে হাসোয়েকি জানান, ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন বীর সৈনিকের সমাধি রয়েছে, এর মধ্যে জাপানের ২৪ জন সৈনিক। ফরেনসিক দল এই ২৪ জনের দেহাবশেষ উত্তোলন করে জাপানে পাঠাবেন। ২৪ নভেম্বরের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা। বাংলাদেশের মানুষের সহযোগিতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এই কাজ সম্ভব হচ্ছে। সৈনিকদের পরিবারগুলো এই উদ্যোগে আবেগাপ্লুত এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ।
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম পাশে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন সৈনিক এখানে সমাহিত আছেন। ১৯৬২ সালে এক সৈনিকের দেহাবশেষ তার পরিবারের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছিল।
কমনওয়েলথ গ্রেভইয়ার্ড কমিশন দীর্ঘদিন ধরে এই যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্রের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। জাপানি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এই কাজে সহযোগিতা করছেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক।