নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বিয়ের চার দিনের মধ্যেই নববধূ ফাহিমা আক্তার পপি (২২) প্রাণ হারিয়েছেন। স্বামীর মুঠোফোনে সাবেক প্রেমিকের পাঠানো বার্তা ও ভিডিও নিয়ে অপমান ও অপবাদের জেরেই তার এই মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে।
গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার ওয়ান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পপির মৃত্যু হয়। এর আগে বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের নিজ বাড়ির পাশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
পপি চরবাটা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সেলিমের মেয়ে এবং স্থানীয় সৈকত সরকারি কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলেজে পড়াশোনা করার সময় পপির সঙ্গে মহিন ইসলাম রিয়াদের পরিচয় হয়। তবে পরিবারিক সিদ্ধান্তে গত ১৮ নভেম্বর বিজিবি সদস্য আবদুল্লাহ আল মাহমুদের সঙ্গে পপির বিয়ে হয়।
বিয়ের পর রিয়াদ, পপির স্বামী মাহমুদকে জানায় যে, পপির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রিয়াদ আরও অভিযোগের স্বপক্ষে পপির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কিছু বার্তা ও ভিডিও মাহমুদের মুঠোফোনে পাঠায়। এ ঘটনার পর থেকে মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যরা পপির চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে অপবাদ দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে মাহমুদ সংসার করার ইচ্ছা প্রকাশ না করে পপিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়। এসব মানসিক চাপে পপি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া জানিয়েছেন, নিহত নববধূর চাচা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পপির পরিবার সুবিচার দাবিতে সরব।