বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এনসিপির অবস্থান: যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ৩১ মে ২০২৫ ০৩:৪৬ অপরাহ্ণ   |   ১০৫ বার পঠিত
বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এনসিপির অবস্থান: যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-


 

সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল টকশোতে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু দাবি করেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেপথ্যে বিএনপির সঙ্গে ৫০ থেকে ৭০টি আসন নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে। তিনি আরও বলেন, "যদি এই গোপন আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়, তাহলে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।"
 

এ দাবির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শনিবার, তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব মন্তব্যকে "সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর" বলে প্রত্যাখ্যান করেন।
 

"এনসিপি কোনো আসন ভাগাভাগির আলোচনায় যায়নি"

হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন,
“সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি, একটি দলের প্রধান এক অনলাইন আলোচনায় বলেছেন— ‘এনসিপি পর্দার আড়ালে বিএনপির সঙ্গে সিট নেগোসিয়েশন করেছে।’ এ বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কোনো বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এনসিপির কোনো আলোচনা হয়নি। দল হিসেবে এনসিপি সারাদেশে সাংগঠনিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।”


 


 

"ভুল বার্তা ছড়ানো হচ্ছে এনসিপি সম্পর্কে"

তিনি আরও বলেন,
“আমরা লক্ষ্য করেছি, এই আলোচনার মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রেক্ষাপটে এনসিপি সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরির চেষ্টা চলছে— যেন দল গোছানোর জন্য আমরা নির্বাচন পেছাতে চাই। অথচ, এনসিপি তার আত্মপ্রকাশের শুরু থেকেই বিচার, সংস্কার ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে আসছে।”

 

"নির্বাচনের পূর্বশর্ত সুশাসন ও প্রশাসনিক সংস্কার"

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন,
“আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত আগের ভুয়া নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ ছিল না। তাই, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু— যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারে। এজন্য প্রয়োজন একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং প্রশাসনিক সংস্কার।”

 

"সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব, তবে সংস্কার ছাড়া নয়"

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক আরও জানান,
“আমরা মনে করি, প্রশাসনিক ও মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কার সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে এসব সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটি হবে একচেটিয়া ও একপেশে। জনগণের প্রকৃত ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হলে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে, জুলাই চার্টারের আলোকে, একটি সুষ্ঠু গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। পাশাপাশি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুত ‘জুলাই ঘোষণা’ জারি করাও অত্যাবশ্যক।”

 

"ভবিষ্যতের নির্বাচন হতে হবে অর্থবহ ও অংশগ্রহণমূলক"

হাসনাত আব্দুল্লাহ তার বক্তব্যের শেষাংশে বলেন,
“যেনতেন বা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন যেন কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি না হয়। বরং, মৌলিক সংস্কার ও ন্যায়ভিত্তিক রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে অর্থবহ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হোক— এটাই এনসিপির প্রত্যাশা। আমরা সব পক্ষকে বিভ্রান্তি এড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।”