সচিবালয় ঘিরে উত্তেজনা: আন্দোলনে জোরদার অংশগ্রহণ, দর্শনার্থী নিষিদ্ধ ঘোষণা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৭ মে ২০২৫ ১২:৩১ অপরাহ্ণ   |   ১২১ বার পঠিত
সচিবালয় ঘিরে উত্তেজনা: আন্দোলনে জোরদার অংশগ্রহণ, দর্শনার্থী নিষিদ্ধ ঘোষণা

ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-

 

সারাদেশে সরকারি কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন ঘিরে সচিবালয়জুড়ে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। এই আন্দোলনে এখন সরাসরি যুক্ত হচ্ছেন বিএনপিপন্থি সাবেক আমলারা, যাঁরা এতদিন শুধু নীতিগত সমর্থন দিয়ে আসছিলেন।
 

সচিবালয় ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার

পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গতকাল রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ও আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ করে।
 

আন্দোলনের বিস্তার: কলমবিরতি ও কর্মবিরতি

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিল এবং বেতন-গ্রেড ও পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের দাবিতে আজ ও আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা কলমবিরতি পালন করছেন। এ কর্মসূচি ডাকা হয়েছে ১২ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে।
 

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বেতন ও পদোন্নতির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন। একইসঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিও অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন ও মামলা-হয়রানি বন্ধের দাবিতে আজ সারাদেশে কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে।
 

সচিবালয়ের কেন্দ্রীয় আন্দোলন

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে সচিবালয়ের কর্মচারীরা গতকাল টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় সচিবালয়ের সব প্রবেশদ্বারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
 

সচিবালয়ের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন সাবেক সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিবসহ বিএনপিপন্থি সাবেক আমলারা। আজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরি কক্ষে আন্দোলনের সমর্থনে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব ও সাবেক সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারের।
 

আন্দোলন সমন্বয় ও নেতৃত্ব

সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের প্রতিবাদে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। ফোরামের কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মো. নূরুল ইসলাম ও মো. বাদীউল কবির। কো-মহাসচিব হয়েছেন মো. নজরুল ইসলাম, মো. মোজাহিদুল ইসলাম ও নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
 

তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা

ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে তিনটি প্রধান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে:

(১) দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সচিবালয়ের চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখা।

(২) প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপদেষ্টা ও সচিবদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়া।

(৩) ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের’ প্রশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে এবং জনপ্রশাসনের দক্ষতা সংকটের অভিযোগ তুলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ ও জনপ্রশাসন সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের অপসারণের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে স্মারকলিপি প্রদান।
 

সরকারের অবস্থান

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মোখলেস উর রহমান জানান, সংশোধিত অধ্যাদেশ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটি গণহারে প্রয়োগ করা হবে না।
 

বৈঠক ও পরবর্তী পদক্ষেপ

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদীউল কবির জানিয়েছেন, বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা থাকলেও তা হয়নি।