নাটোর প্রতিনিধি:-
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় মাত্র চার মাসের বৈবাহিক জীবনে স্ত্রীর গর্ভে সাত মাসের সন্তান থাকার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতারণা, জালিয়াতি ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ফিরোজ আলী। একইসঙ্গে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ২৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) নাটোর জেলা কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফিরোজের স্বজনরা।
সংবাদ সম্মেলনে ফিরোজ আলীর বড় বোন তাওহিদা ইসলাম তন্নী জানান, গুরুদাসপুর উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে ফিরোজ আলী ও রাজশাহীর তানোর উপজেলার শিমলা আক্তার রিয়া মোবাইল ফোনে পরিচয়ের মাধ্যমে সম্পর্কে জড়ান। পরিচয়ের মাত্র এক মাসের মাথায়, ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছুদিন পর রিয়া জানায়, সে অন্তঃসত্ত্বা। এতে সন্দেহ হলে ফিরোজ তাকে নাটোর আইডিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে ২০২৫ সালের ১১ এপ্রিল করা আল্ট্রাসনোগ্রামে ধরা পড়ে, রিয়ার গর্ভে ২৮ সপ্তাহ বয়সী (প্রায় ৭ মাস) সন্তান রয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর ফিরোজ বুঝতে পারেন, বিয়ের আগেই রিয়া গর্ভবতী ছিলেন।
এ ঘটনায় প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে ফিরোজ আলী গুরুদাসপুর আমলী আদালতে মামলা (নং ২১৩/২৫) দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিয়ের আগেই রিয়া জলিলের ছেলে রাব্বি নামের এক যুবকের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। ১৭ এপ্রিল রিয়া নগদ ৩০ হাজার টাকা, দুটি সোনার চেইন ও এক জোড়া কানের দুল নিয়ে রাব্বির সঙ্গে পালিয়ে যান। পরে জানা যায়, রাব্বির বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কালিবাড়ী পাবনিয়া পাড়া গ্রামে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রিয়া থানায় ফিরোজের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন বলে দাবি করেছে ফিরোজের পরিবার। তাদের অভিযোগ, মামলা করায় এখন তারা সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকির মুখে রয়েছে এবং চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তাওহিদা ইসলাম তন্নী বলেন, "আমরা পুলিশ প্রশাসনসহ দেশের সকল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, যেন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একইসঙ্গে আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি।"