ফরিদপুরের নগরকান্দায় র্যাব সদস্যদের একটি দল ভুয়া র্যাব চক্রকে ধাওয়া করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন। স্থানীয়রা ভুয়া ও প্রকৃত র্যাব সদস্যদের আলাদা করতে না পেরে উভয় পক্ষকেই লক্ষ্য করে হামলা চালান। এতে প্রকৃত র্যাব সদস্যরাও মারধরের শিকার হন।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের জয় বাংলার মোড় এলাকায়, চর যশোরদী ইউনিয়নে।
ধৃত ভুয়া র্যাব পরিচয়ধারীদের মধ্যে রয়েছেন:
স্বপন খান (৪৫), ছাব্বিশপাড়া, জাজিরা, শরীয়তপুর
মিন্টু গাজী (৪৫), মদনা, চাঁদপুর সদর
মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), কুনসিবাড়ি, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা
মো. জামিল (৩২), আন্ডারচর, কালকিনি, মাদারীপুর
দিদার (২৯), হিদাডাঙ্গা, আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হর্ন বাজিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটছিল দুটি মাইক্রোবাস। স্থানীয়দের সন্দেহ হয়, তারা প্রথম মাইক্রোবাসটিকে মহাসড়কে গাছ ফেলে আটকে দেন। গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দিলেও তাদের কারও গায়ে ছিল না ইউনিফর্ম। পালাতে গেলে স্থানীয়রা তাদের ধরে গণপিটুনি শুরু করেন।
এর কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দ্বিতীয় মাইক্রোবাস, যাতে ছিলেন র্যাব-১০ এর প্রকৃত সদস্যরা। তারাও ইউনিফর্মে না থাকায় জনতা তাদেরকেও ভুয়া র্যাব ভেবে মারধর করেন। পরে পুলিশ ও র্যাবের অন্য সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং উভয় পক্ষকে উদ্ধার করেন।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসআই আমীরুল ইসলাম জানান, ভুয়া র্যাব সদস্যসহ প্রকৃত র্যাব সদস্যদের জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়। রাত ৮টা ৩০ মিনিটে র্যাব সদস্যরা তাদের নিয়ে ফরিদপুর ক্যাম্প হয়ে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার পথে রওনা দেন।
র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তারিকুল ইসলাম জানান, “আমাদের একটি দল ডাকাত দলের পেছনে ধাওয়া করছিল। স্থানীয়দের বিভ্রান্তির কারণে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। অনেকেই তখন ইউনিফর্মে ছিলেন না বলে মানুষ চিনতে পারেনি।”
র্যাব-১০ এর মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন বলেন, “ভুয়া র্যাব দলের পেছনে ধাওয়া করে আমরা পদ্মা সেতু পার হয়ে আসছিলাম। জনগণ যখন তাদের মারধর করছিলেন, তখন আমরা তাদের প্রাণ রক্ষায় হস্তক্ষেপ করি। কিন্তু স্থানীয়রা আমাদেরও ভুয়া ভেবে ভুল করেন। এ নিয়ে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তবে তা গুরুতর নয়।”
এই ঘটনার পর এলাকাজুড়ে বেশ কিছুক্ষণ উত্তেজনা বিরাজ করলেও পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।