প্রিয় উপদেষ্টা মহোদয় ও নির্বাচন কমিশনবাহিনী,
আপনাদের প্রতি ১৮ কোটি জনগণের সালাম ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। আমি একজন সাধারণ নাগরিক এবং চট্টগ্রাম জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে বিনীতভাবে এই খোলা চিঠি লিখছি — মনের ভাব প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে।
দীর্ঘ দিন ধরে চলমান অবিচার, নিপীড়ন, গুম-খুন ও অর্থনৈতিক লুটপাটের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের প্রত্যাশায় জনগণ গত জুলাই–আগস্টে গণজাগরণ সংগঠিত করে। সেই আন্দোলনের অধীনে আপনাদেরকে সাংবিধানিকভাবে জাতির রক্ষাকারী ও নিরপেক্ষভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার বিশেষ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। এই দায়িত্বের প্রতি জনগণের আস্থা ও প্রত্যাশা ছিল অত্যন্ত উচ্চ।
তবে, ক্ষমতা গ্রহণের পর ইতিবাচক দিক থাকলেও কয়েকটি সমস্যা ও বিচ্যুতি লক্ষ করলে সেটি দর্শনীয়—যা আপনারা অবশ্যই নজরে আনবেন বলে আমি আশাবাদী। মানুষ শান্তি, নিরাপদ বাসস্থান, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সামাজিক নিরাপত্তা চায়। পূর্বের অবস্থা থেকে উত্তরণের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল—আইনশৃঙ্খলার সঠিক রক্ষা, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি মুক্ত সমাজ, এবং সরকারি সম্পদের ন্যায্য ব্যবহার।
কিন্তু সম্প্রতি নিগ্রহ, সহিংসতা ও সংগঠিত অপকর্মের অভিযোগ বাড়ছে। কিছু কুচক্রী গোষ্ঠী—নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য—বহুদলীয় গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বিশৃঙ্খলায় বদলানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা রাজনৈতিক নেতাদের ছদ্মবেশে ব্যবহার করে, বেআইনি অর্থের উৎস ও কালো টাকার মাধ্যমে সমাজে অস্থিরতা সৃজন করছে। এসব ‘ক্রিমিনাল এক্টিভিস্ট’—রাষ্ট্র ও জাতির ক্ষতি করে—দ্রুত আইনের আওতায় আনতে না পারলে সামাজিক অরাজকতা বেড়ে যাবে বলেই আমি উদ্বিগ্ন।
অতএব আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করছি—
জাতির শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বাধীন, ত্বরিত ও ন্যায়নিষ্ঠভাবে ব্যবহার করুন; কেউই আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে না।
যারা সহিংসতা, চাঁদাবাজি, অবৈধ অর্থ-লেনদেন ও অন্যায় কর্মকাণ্ডে জড়িত—তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
বেআইনি অর্থসংস্থান, কালো টাকা ও অর্থপৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করার মাধ্যমে অপশক্তির আর্থিক উৎস কেটে দিন।
নির্বাচনকে ভয়মুক্ত ও অবাধ–সুষ্ঠু করতে নিরাপত্তার ব্যাপ্তি বাড়ান — যাতে সাধারণ ভোটার ও প্রার্থীরা নির্ভয়ে অংশ নিবে।
সেনাবাহিনী ও প্রশাসনিক বিভাগসমূহের প্রত্যাশিত সেবামূলক চিত্র বজায় রাখতে যত্নশীল হোন; দুর্নীতি ও অনায়াস প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
আমি বিশ্বাস করি—আপনাদের সৎ ও নিষ্ঠাবান প্রচেষ্টায় দেশের মানুষ শান্তি, সুব্যবস্থা ও ন্যায়বিচার ফিরে পাবে। এই খোলা চিঠি দেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তির স্বার্থে লেখা। আমি সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে এসে দেশের কল্যাণে কাজ করতে আহ্বান জানাচ্ছি।
আপনাদের সুসংহত কর্তৃত্ব ও দ্রুত পদক্ষেপের জন্য সক্রিয় অনুরোধ করছি।
ইতিস্বয়, জনস্বার্থে.......
সাংবাদিক মুহাম্মদ বাবুল হোসেন বাবলা,চট্টগ্রাম জেলা ।