এলাকা ছেড়েছেন হেনস্তার শিকার সেই কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা, যা বলছে জামায়াত

প্রকাশকালঃ ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৬ অপরাহ্ণ ০ বার পঠিত
এলাকা ছেড়েছেন হেনস্তার শিকার সেই কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা, যা বলছে জামায়াত

ঢাকা প্রেস
মিজানুর রহমান,বিশেষ প্রতিনিধি (কুমিল্লা):-


কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা ঘটার পরপরই তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান। রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি কুমিল্লা থেকে ফেনীতে চলে যান।

 

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমকে আব্দুল হাই জানান, বর্তমানে তিনি ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে আছেন এবং মারধরের কারণে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, পুলিশ ও প্রশাসন যদি তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন, তবে তিনি চৌদ্দগ্রামে তার বাড়িতে ফিরে আসবেন।
 

ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আব্দুল হাই বলেন, রোববার দুপুরে তিনি বাজারে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেন এবং তাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৯টি মামলা রয়েছে এবং তিনি প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে পরিচিত।
 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন তার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল, যার কারণে তিনি এবং তার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা বিপ্লব এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির পর তিনি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও বিরোধে জড়ান। এমনকি দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকারও হন।
 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে একটি হত্যা মামলাও আছে। তিনি একাধিকবার কারাগারে গিয়েছেন নানা অভিযোগে। স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির অভিযোগও তার বিরুদ্ধে উঠেছে, এবং অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে দল পরিবর্তন করতে বাধ্য করে ভাতা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগও রয়েছে।
 

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আবুল হাসেম তাদের দলের কেউ নন, তবে তিনি সমর্থক বা অনুসারী হতে পারেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
 

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর তাদের নথি থেকে জানা গেছে, আব্দুল হাই বিরুদ্ধে দুটি মামলার তথ্য রয়েছে, যার একটি হত্যা মামলা। তিনি নিজেও বলেছেন, তার বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে এবং তিনি ১৪ বার জেলে গিয়েছেন। তবে অনলাইন সিস্টেমে ত্রুটির কারণে সব মামলার তথ্য এখনই পাওয়া যায়নি।